বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

একই মঞ্চে হাছান-বুলু, জমল কথার লড়াই

  •    
  • ২ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৭:৩৮

বিএনপির বুলুর অভিযোগের পর তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এতক্ষণ ধরে সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্যগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এবং আপনাদের দলের কেউ কেউ সরকারের সমালোচনা করছিলেন। সরকারে থাকলে আলোচনা-সমালোচনা হবে এটাই স্বাভাবিক। যে গাছে ফল ধরে, সে গাছে ঢিল মারে, অন্য গাছে মারে না। যারা ক্ষমতায় থাকবে তাদের সহ্য করার ক্ষমতাও থাকতে হয়। আর সেটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আছে।’

চরমোনাইয়ের পীর রেজাউল করিমের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনের জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিয়ে একই মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু।

বিরোধী দলটির নেতা সেখানে গিয়ে অভিযোগ তুললেন সরকারের বিরুদ্ধে, আর পরে তার জবাব দিলেন মন্ত্রী।

সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ‌্যানে হয় ধর্মভিত্তিক দলটির এই সম্মেলন। এতে সারা দেশ থেকে আসা দলটির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এই সম্মেলনে উঠে আসে বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের প্রসঙ্গ। সমাবেশটি দলটি করতে চেয়েছিল নয়াপল্টনে, কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। অনুমতি ছাড়াই জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের পর নানা নাটকীয়তা শেষে সমাবেশটি হয় গোলাপবাগে।

বুলু তুললেন ৭ ডিসেম্বরের সেই সংঘর্ষের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের আন্দোলন-সংগ্রাম চলছে৷ ৭ তারিখ আমাদের পার্টি অফিসের সামনে পুলিশ নির্মমভাবে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্য করেছে৷ গত এক মাসে আমাদের ২৫ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ প্রতিদিন আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে৷ তারপরও আমরা বাংলাদেশের মানুষের সামনে ১০ দফা আন্দোলনের একটা রূপরেখা দিয়েছি৷’

এর আগে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা (বিএনপি) ১০ তারিখ সমাবেশ করতে চেয়েছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, উনারা এখানে আসেন নাই। উনারা নয়াপল্টনের তাদের অফিসের সামনে সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন, পরে অন্য মাঠে গেছে।’

সোহরাওয়ার্দীতে আসায় ইসলামী আন্দোলনের প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, “আপনারাও তো বলতে পারতেন, ‘বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে সম্মেলন করব।’ কিন্তু আপনারা তা করেন নাই। কারণ, সেখানে রাস্তা বন্ধ করে সম্মেলন করলে মানুষের অসুবিধা হবে। বায়তুল মোকাররম মুসল্লিদের নামাজের সমস্যা হবে।”

অন্য দলের আয়োজনে গিয়ে দুই নেতার মধ্যে কথার এই লড়াই বেশ জমে ওঠে।

বুলু বলেন, ‘রাষ্ট্রকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। বিচারব্যবস্থা এবং আইনের শাসন ধ্বংস হয়ে গেছে৷ এগুলোর মেরামত করা দরকার৷ রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত করার লক্ষ্যে সমমনা সকল রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে আগামীদিনে নির্বাচন করতে হবে৷’

বিএনপির জাতীয় সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যে জায়গায় রাষ্ট্রকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে তা জাতীয় সরকার মেরামত করবে, বিএনপি এককভাবে করবে না।’

খেলাপি ঋণ চার লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে (প্রকৃত খেলাপি ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা) বলেও দাবি করেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি কারা এই খেলাপির সঙ্গে জড়িত, তাদের নাম প্রকাশ করুন৷ কিন্তু সরকার তা করেনি৷

‘৩০ দিনের মধ্যে সাদা কাগজে সই করে ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা নেয়া হয়েছে৷ এ বিষয়েও সরকারের মাথাব্যথা নেই৷ দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি লুট করে আওয়ামী পরিবারের সদস্যরা বিশ্বধনীদের খাতায় নাম লিখিয়েছে৷’

বুলু ছাড়াও সরকারের সমালোচক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম, গণ অধিকার পরিষদের নেতা রাশেদও সরকারের সমালোচনা করেন। জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসিহও অংশ নেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি এতক্ষণ ধরে সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্যগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এবং আপনাদের দলের কেউ কেউ সরকারের সমালোচনা করছিলেন। সরকারে থাকলে আলোচনা- সমালোচনা হবে এটাই স্বাভাবিক। যে গাছে ফল ধরে, সে গাছে ঢিল মারে, অন্য গাছে মারে না। যারা ক্ষমতায় থাকবে তাদের সহ্য করার ক্ষমতাও থাকতে হয়। আর সেটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি সমালোচনার জবাব দিতে আমি আসি নাই। সমালোচনা করতে গেলে এটি একটি বিতর্ক সভা হয়ে যাবে।’

তবে সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসার পরামর্শ দেন হাছান। তিনি বলেন, ‘কাজ যেগুলো হচ্ছে, সেটির প্রশংসা থাকতে হয়। ভালো কাজের প্রশংসা না থাকলে কাজের উৎসাহ কমে যায়। ভালো কাজের প্রশংসা করতে হবে, খারাপ কাজের সমালোচনাও করতে হবে। আমরা মনে করি, ভুলের সমালোচনা ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ থাকে।’

সবকিছু থেকে ‘না’ বলার সংস্কৃতি থেকে সব দলের বেরিয়ে আসা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তথ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে সব সংঘর্ষের রাজনীতি থেকেও বেরিয়ে আসা উচিত বলে মত দেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এই দেশ আমাদের সবার। সবাই রক্ত দিয়ে এই দেশ রচনা করেছে। আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য মানুষের কল্যাণ করা এবং কল্যাণ করার জন্য সাংঘর্ষিক রাজনীতির অবসান হওয়া দরকার।

“একই সঙ্গে সবকিছুতে না বলার রাজনীতির বন্ধ হওয়া দরকার। ভালো হলেও ‘না’, খারাপ হলেও ‘না’। সবকিছুতে এই যে ‘না’ বলার সংস্কৃতি, পলিটিক্স অফ ডিনায়েল, এবং সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক বন্ধ হওয়া দরকার। তাহলেই দেশের জন্য কল্যাণ হবে।”

কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিসের স্বীকৃতি দেয়ার কথাটিও তুলে ধরেন হাছান। তিনি বলেন, ‘সেই দাবি পূরণ করা হবে বলে মুলা ঝুলিয়ে রাখা হতো। প্রধানমন্ত্রী মুলা ঝুলিয়ে না রেখে কাজে পরিণত করেছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর