বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগে শূন্য হওয়া ৬টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে তিনটিতে প্রার্থী দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বাকি তিনটির দুটিতে প্রার্থী দেবে ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ। আর বাকি আসনটি থাকবে উন্মুক্ত।
রোববার রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, যে তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো বগুড়া-৬ আসনে রাগেবুল আহসান রিপু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে মু. জিয়াউর রহমান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে আব্দুল ওদুদ।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টি ও বগুড়া-৪ আসনে জাসদ প্রার্থী দেবে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (গোমস্তাপুর-নাচোল-ভোলাহাট) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহি। সে লক্ষ্যে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেন। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগও চালিয়ে আসছিলেন।
স্থানীয় সাধারণ মানুষও মাহিয়া মাহিকে নিয়ে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি।
অবশ্য ক্ষমতাসীন দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা মাহির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাদের বক্তব্য, দলে মাহির ত্যাগ, শ্রম, অবদান, সংগ্রাম কোনোটাই নেই। পোড় খাওয়া নেতা-কর্মীরা এমন কাউকে দল মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মেনে নেবেন না।
মাহির পাশাপাশি এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মু. জিয়াউর রহমান। আর শেষ পর্যন্ত তিনিই মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি ২০০৮ সালে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এ ছাড়াও সাবেক এমপি ও গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নাচোল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের এবং জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিমা বেগম এ আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন উন্মুক্ত রাখায় বিএনপির সদ্য পদত্যাগী নেতা আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার এই উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে জল্পনা নতুন মাত্রা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন দলীয় সাবেক এমপি আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। পরে ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে ঘোষণা দেয়া দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন। অবশ্য সে সময় দলের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করেন তিনি।
শোনা যাচ্ছে, ওই আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাত্তার ভূঁইয়া নিজে অথবা তার ছেলে মাঈনুল হাসান ভূঁইয়া প্রার্থী হতে পারেন।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাত্তার ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কত কথাই তো রটবে। আপাতত এসব নিয়ে চিন্তা করছি না।’