টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের সাগরদিঘি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতার মামলায় চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
রোববার বিকেলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল-বাসাইল আমলি আদালতের বিচারক ফারজানা হাসনাত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে দুপুরে শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে হেকমতকে গ্রেপ্তার করে ক্রিমিনাল ইনভেস্টেগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।
তাকে গ্রেপ্তারের তথ্য ছড়িয়ে পড়লে উচ্ছ্বসিত লোকজন সাগরদিঘি এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন। এলাকাবাসী তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
সাগরদিঘি ইউপি চেয়ারম্যান হেকমতকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ।
তিনি জানান, দুপুরে শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে হেকমতকে গ্রেপ্তার করেন সিআইডি সদস্যরা। পুলিশ তাকে আদালতে নিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। বিচারক রিমান্ড শুনানির দিন সোমবার নির্ধারণ করে তাকে আদালতে পাঠানোর আদেশ দেন।
চেয়ারম্যান হেকমতের শাস্তি দাবিতে ঘাটাইলে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। মিছিলে যোগ দেন আওয়ামী লীগ নেতা শামস উদ্দিন, যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক, শাহাদত সিকদার, আজহার উদ্দিন, ইউপি সদস্য সুরুজ ও মো. ওয়াজেদ।
২০১৮ সালের ২৮ মার্চ ঘাটাইলের সাগরদিঘি ইউপি নির্বাচনের আগের রাত ৩টার দিকে গুলিতে আব্দুল মালেক নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। পরদিন গুপ্তবৃন্দাবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।
স্থানীয়রা জানান, সাগরদিঘী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হেকমত সিকদারের লোকজন ব্যালট পেপারে সিল মারছে- এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়লে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুল্লাহ বাহারের সমর্থকসহ এলাকাবাসী সেখানে হামলা চালায়। এ সময় স্কুল ঘরের ভেতর থেকে হামলাকারীদের ওপর কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও গুলি চালায়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুল মালেক নামের একজন নিহত হন। তিনি গুপ্তবৃন্দাবন গ্রামের বাসিন্দা নেছার উদ্দিনের ছেলে। বাহারের সমর্থক মালেক যুবলীগ কর্মী ছিলেন।
হেকমত সিকদার সেদিনের নির্বাচনে সাগরদিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হন।
পরে ২ এপ্রিল আব্দুল মালেকের স্ত্রী মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে ঘাটাইল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি একাধিক তদন্তকারী সংস্থা তদন্তের পর সিআইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।
টাঙ্গাইল সিআইডির পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান আকন্দ জানান, তদন্ত শেষে রোববার দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে হেকমত সিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে নেয়া হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার সাগরদীঘি এলাকার অ্যাডভোকেট ফরহাদ হত্যা মামলারও এজাহারভুক্ত আসামি।