বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপি না এলে একতরফা নির্বাচনের ইঙ্গিত

  •    
  • ১ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৫:৩৮

বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপে নিয়ে আসতে, গণতন্ত্রের শিকড় বাংলাদেশে শক্ত করতে যথেষ্ট চেষ্টা করছে। বর্তমানে গণতন্ত্রের যে বিকাশ, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই হয়েছে। যে কারণে আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, এই সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর। এরপর সংবিধানে যেভাবে বলা আছে, সেভাবে নির্বাচন হবে। যেহেতু এটি গণতান্ত্রিক দেশ। নির্বাচন গণতান্ত্রিক দেশের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কাজেই সঠিক সময়ে সঠিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: আইনমন্ত্রী

২০১৪ সালের মতোই বিএনপি জাতীয় নির্বাচন বর্জন করলে আবার একতরফা নির্বাচন আয়োজনের ইঙ্গিত দিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বলেছেন, কোনো দল নির্বাচনে না এলে সেটি তাদের দায়িত্ব না। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে কেউ ভোটে বাধা দিলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া। সেটি তারা করবেন।

রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে নতুন বছরের শুভেচ্ছাবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার না হলে ২০১৪ সালের মতোই নির্বাচন বর্জন করার বিষয়ে বিএনপির অবস্থান নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি কোনো দল নির্বাচনে না আসে, সেটা তো আমাদের দায়িত্ব না। আমরা আশা করব, পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পর সংবিধানে যে সময়ে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে—সেটা ২০২৩ সালের শেষে হোক, কিংবা ২০২৪ সালের প্রথমে—যখন নির্বাচন হবে, আমরা আশা করব সবাই তাতে অংশগ্রহণ করবে।’

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে একটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে ২০১১ সালের প্রথম প্রান্তিকে উচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ঘোষণার পর ওই বছর নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের ব্যবস্থা ফেরায় আওয়ামী লীগ সরকার।

এর প্রতিবাদে ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। সেই সঙ্গে সেই নির্বাচন বানচালে যায় আন্দোলনে। তবে বিরোধীদের বর্জনের মুখে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ।

একতরফা নির্বাচন করেছে জাতীয় পার্টি এবং বিএনপিও। তবে তাদের সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির সরকার দুই বছরের কিছু বেশি সময় এবং ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটের পর বিএনপি সরকার টিকে থাকে অল্প কদিন।

তবে আওয়ামী লীগ সরকার মেয়াদ পূর্তি করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন দেয়। সেই নির্বাচনের আগে আবার আন্দোলনের ঘোষণা দিলেও তাতে অংশ নেয় বিএনপি। ২০-দলীয় জোটের পাশাপাশি গড়ে তোলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে আরও একটি জোট।

তবে সেই নির্বাচনে আগের রাতেই ভোট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনে আবার তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ফিরে গেছে। আর আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধীদের এই দাবি নাকচ করে এমনকি আলোচনায় না বসার কথাও বলছে। তারা বলছে, উচ্চ আদালত এবং জাতীয় সংসদ- দুই জায়গাতেই তত্ত্বাবধায়কের বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সেটি ফেরার আর ‍সুযোগ নেই।

বিএনপি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ফিরে গিয়ে বলছে, না হলে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না

আইনমন্ত্রী আবারও সরকারের সেই দৃঢ় অবস্থানের কথাই তুলে ধরলেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপে নিয়ে আসতে, গণতন্ত্রের শিকড় বাংলাদেশে শক্ত করতে যথেষ্ট চেষ্টা করছে। বর্তমানে গণতন্ত্রের যে বিকাশ, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই হয়েছে। যে কারণে আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, এই সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর। এরপর সংবিধানে যেভাবে বলা আছে, সেভাবে নির্বাচন হবে।

‘যেহেতু এটি গণতান্ত্রিক দেশ। নির্বাচনী গণতান্ত্রিক দেশের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কাজেই সঠিক সময়ে সঠিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সরকার এবং বিরোধী পক্ষ যদি এই অবস্থানে থাকে, তাহলে ২০১৩-১৪ এবং ২০১৫ সালের মতো সংঘাতপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি আবার ফিরে আসে কি না, সেই আশঙ্কার কথাও বলাবলি হচ্ছে।

এই আশঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘গেল নির্বাচনের আগে দেখেছি যে মাঠে সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারা ছিল না। আগুন সন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা অপকর্ম আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।

‘আমাদের (সরকার) দায়বদ্ধতা জনগণের কাছে। আমরা জনগণকে দেশের উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছিলাম। তা পূরণ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু জনগণের ভোটাধিকার যদি কেউ বাধা দিতে চায়, তাহলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা প্রশ্রয় দেয়া হবে না, জামায়াত প্রসঙ্গে সতর্কতা

গত শুক্রবার রাজধানীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিত বিএনপির মিছিলের দিন যুগপৎ কর্মসূচি দেয়া জামায়াত কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের বিষয়েও প্রশ্ন ছিল মন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেবে। এটা পরিষ্কার কথা।

‘কারণ, এখন জনগণ উন্নয়ন চায়। আমরা সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই। কাজেই এর মধ্যে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক: ফাইল ছবি

মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের সমালোচনারও জবাব দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চেয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের সময়। আমি বলব, যেসব ক্ষেত্রে জনগণ বিচার পাইনি, সেসব ক্ষেত্রে বিচারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি।

‘যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তুলছে, তারা কিন্তু অতীতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নিয়ে কোনো কথা বলেননি। কাজেই তাদের বক্তব্য কতটা বিশ্বাসযাগ্য, তা আপনারা নির্ধারণ করবেন।’

প্রতিশ্রুতি পূরণই চ্যালেঞ্জ

সরকার তার নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সরকারের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব অঙ্গীকার করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করা। যেসব অঙ্গীকার এখনো শেষ হয়নি, সেগুলো শেষ করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

‘শেখ হাসিনা বলেছিলেন বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু করবে। ২০২২ সালের ২৫ জুন সেই পদ্মাসেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল চালু করা হয়েছে। ইনশা আল্লাহ, এ বছরে বঙ্গবন্ধু টানেল, ঢাকা-ময়মনসিংহ-ঢাক-সিলেটের ফোর লেনের সড়কের কাজ শেষ হবে। যেসব উন্নয়ন কাজ এ বছর শেষ হওয়ার কথা, তা শেষ হবে। আমরা এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে প্রকল্পগুলো শেষ করব।

‘আমরা করোনা মহামারির ধকল কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। এখনো চীনে যথেষ্ট করোনা রোগী আছে বলে আপনারা শুনছেন। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ-তো রয়েছে। এগুলোর প্রভাব কাঠিয়ে ওঠে আমরা যেসব প্রকল্পের কথা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবয়ন করা চ্যালেঞ্জ। যে কারণে আমি চ্যালেঞ্জের কথা বলেছি।’

এ বিভাগের আরো খবর