বাঘ গণনার জন্য সুন্দরবনে ক্যামেরা বাসানো হচ্ছে। পশ্চিম বন বিভাগের খুলনা রেঞ্জের কালাবগি ফরেস্ট স্টেশন এলাকায় রোববার এ ক্যামেরা বসানো হবে।
ক্যামেরা বসানোর আগে খাল সার্ভে করে নিতে হয়। ১৫ ডিসেম্বর থেকে কালাবগি এলাকায় খাল সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানের বিভিন্ন জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ পেয়েছে বন বিভাগ।
এসব বিষয় জানিয়েছেন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ও বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ক্যামেরা বসানোর জন্য বনের চার রেঞ্জকে ৬৬৫টি গ্রিডে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রিডের আয়তন চার বর্গকিলোমিটার। প্রতি গ্রিডে দুইটি করে ক্যামেরা বসিয়ে ৪০ দিন রাখা হবে। এভাবে আগামী তিন মাস ধারাবাহিকভাবে খাল সার্ভে ও ৬৬৫টি গ্রিডে ক্যামেরা ট্র্যাপিং হবে। পরে ক্যামেরার ছবি প্রযুক্তির সহায়তায় বিশ্লেষণ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরের ধাপে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে তিন মাস আবারও ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘশুমারি হবে। বাঘশুমারির ফল প্রকাশ করা হবে ২০২৪ সালের মার্চে।’
ডিএফও বলেন, ‘২০১৫ ও ২০১৮ সালে সুন্দরবনে খুলনা, সাতক্ষীরা ও শরনখোলা রেঞ্জের বাঘ গণনা হয়েছিল। এবার বনের চারটি রেঞ্জেই বাঘ গণনা করা হবে।’
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৩ মার্চ ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের অনুমোদন দেয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর মেয়াদ চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত। এ প্রকল্পে দুটি অংশ রয়েছে- একটি হল বাঘ গণনা ও অন্যটি বাঘ সংরক্ষণ।
চলতি বছরের অক্টোবর থেকে বাঘ গণনার কাজ শুরুর কথা ছিল। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে প্রকল্পে অর্থ ছাড়া পেতে দেরি হয়। অক্টোবরের মাঝামাঝি প্রকল্পের বাঘ গণনা অংশের জন্য ৩ কোটি ২৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ছাড়া দেয় পরিকল্পনা কমিশন।
আবু নাসের বলেন, ‘পরিকল্পনা কমিশন থেকে টাকা ছাড়ের বিষয়টি অনুমোদনের পর বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কিছু প্রসেস ছিল। সেসব সম্পন্ন করে বাঘ গণনা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’
বন বিভাগের তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বের ১৩ দেশে ৩ হাজার ৮৪০টি বাঘ প্রকৃতিতে টিকে আছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের জরিপ অনুয়ায়ী বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘ আছে ১১৪টি। ২০১৫ সালে ছিল ১০৬টি ও ২০০৪ সালের জরিপে ছিল ৪০৪টি।