বিএনপির সঙ্গে জোট ভেঙে যাওয়ার পর যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিলেও প্রথম কর্মসূচিতেই বাধায় পড়ল জামায়াতে ইসলামী। বায়তুল মোকাররমে জড়ো হওয়ার ঘোষণা দিয়ে না এলেও মালিবাগে ঝটিকা মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে দলটি।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দাবিতে বিএনপির মিছিলের রুট ঘোষণা হয় নয়াপল্টন থেকে মগবাজার। জামায়াত জমায়েত হওয়ার ঘোষণা দেয় বায়তুল মোকাররমের সামনে। তবে সেখানে আসেনি নেতা-কর্মীরা।
তবে জুমার নামাজের পর মালিবাগ এলাকায় দলটির ব্যানারে মিছিলের চেষ্টা হয়। সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের সামনে আসার পর শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পুলিশকে এ সময় গুলি করতে দেখা যায়, ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও।
ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজকে আটক করার কথাও জানিয়েছে বাহিনীটি।
বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোট ভেঙে যাওয়ার কথা দলটির আমির গত ২৭ আগস্টই জানান দলীয় এক সভায়। তবে স্বীকার করছিল না বিএনপি। তবে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় দলটির বিভাগীয় সমাবেশের দুই দিন আগে সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথমবারের মতো বলেন, তাদের জোট আর নেই। এখন হবে যুগপৎ আন্দোলন।
গোলাপবাগে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ থেকে বিএনপির ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় মিছিলের ডাক দেয়ার পর জামায়াতও একই দিন ডাকে মিছিল।
তবে সেদিন ঢাকায় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন থাকায় কর্মসূচি পেছাতে বাধ্য হয় বিএনপি। পরে কর্মসূচি পেছায় জামায়াতও। বিএনপির সঙ্গে মিল রেখে ৩০ ডিসেম্বর মিছিলের ঘোষণা দেয় তারাও।
শান্তিনগর এলাকায় জামায়াতের নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা
জামায়াতের ঢাকা মহানগর শাখা থেকে ঘোষণা আসে, বায়তুল মোকাররমে জড়ো হবে তারা। সকাল থেকে সেখানে আইনশৃঙ্খল বাহিনী এবং গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিও ছিল। কিন্তু জুমার নামাজের শেষে কাউকে মিছিল বের করতে দেখা যায়নি।
জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তরের এক নেতা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, পুলিশের অনুমতি না মেলায় তারা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সামনে কর্মসূচি থেকে সরে এসেছেন। তবে ঢাকা মহানগর উত্তরের মিছিল শান্তিনগরে ও দক্ষিণের মিছিল যাত্রাবাড়ীতে হয়েছে।
জামায়াত না আসার পর বায়তুল মোকাররমে মোতায়েন করা পুলিশ সদস্যদের সরিয়ে নেয়া হয়।
এরপর মালিবাগ মোড়ে হোসাফ টাওয়ারের সামনে ঘটে সংঘাত।
শান্তিনগর এলাকায় জামায়াতের নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা
রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহেন শাহ মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জুমার নামাজ শেষে জামায়াতের ব্যানারে কিছু লোক মিছিল বের করার চেষ্টা করে সেখা। তারা মিছিলের নামে সরাসরি পুলিশের উপরে আক্রমণ করে। এতে বেশ কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যারা সরাসরি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের আটক করা হয়।’
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে জামায়াতের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সংঘর্ষের পর আল আমিন ও আব্দুস সোবহান নামে দুই জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সোবহানের ডান হাত ভেঙে গেছে, আল আমিনের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ইটের আঘ আঘাত রয়েছে।
তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসা রমনা থানার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জামায়াতের ইউনিটের দুই সদস্যকে মালিবাগ মোড় থেকে বেলা দুইটায় আটক করে রমনা থানায় নিয়ে যাই। এদের বিরুদ্ধে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।’