বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা: রূপপুরের পণ্যসহ রুশ জাহাজকে ভিড়তে মানা

  •    
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৫:৪০

রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজে ‘উরসা মেজর’ এ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য আসার কথা ছিল গত ২৪ ডিসেম্বর। সেটি পৌঁছানোর কথা ছিল মোংলা বন্দরে। তবে ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জানায় যে, ওই জাহাজটি আসলে ‘উরসা মেজর’ নয়, তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা থ্রি’। রং ও নাম পাল্টে পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসছে।

রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে আসা রাশিয়ার জাহাজ ভিড়তে পারল না বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এই ব্যবস্থা নিতে হলো ঢাকাকে। রাশিয়াও মেনে নিয়েছে সে সিদ্ধান্ত। ঠিক হয়েছে প্রতিবেশী ভারতের যে কোনো বন্দরে ভিড়বে নৌযানটি। সেখানে মালামাল খালাস করে অন্য জাহাজে মোংলা হয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাইটে আসবে পণ্য।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে নৌ পরিবহন ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।

গত ২৪ এপ্রিল ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা জাহাজে করেই তারা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম পাঠায়। এ নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা।

রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজে ‘উরসা মেজর’ এ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য আসার কথা ছিল গত ২৪ ডিসেম্বর। সেটি পৌঁছানোর কথা ছিল মোংলা বন্দরে। তবে ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জানায় যে, ওই জাহাজটি আসলে ‘উরসা মেজর’ নয়, তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা থ্রি’। রং ও নাম পাল্টে পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসছে।

জাহাজের অবস্থান শনাক্তসংক্রান্ত ওয়েবসাইট গ্লোবাল শিপ ট্র্যাকিং ইন্টিলিজেন্স মেরিন ট্রাফিক ওয়েবসাইটের থেকে পাওয়া তথ্যমতে, বৃহম্পতিবার রাত ৯টায় দেখা গেছে জাহাজটি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার মধ্যেই ছিল। তবে এ তথ্যটি ওয়েবসাইটে ১০ ঘণ্টা আগে হালনাগাদ করা হয়েছিল।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটি ইতোমধ্যে ভারতের উদ্দেশে বাংলাদেশের জলসীমা ত্যাগ করেছে। স্থানীয় এজেন্ট ভারত থেকে পণ্য খালাস করে অন্য জাহাজে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসবে।

জাহাজটির আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার (আইএমও) সনদ নম্বর ৯৫৩৮৮৯২, যা প্রকৃত পক্ষে ‘স্পার্টা ৩’-এর সনদ নম্বর। যাচাই করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে দেয় বাংলাদেশ।

জাহাজটি মোংলা বন্দরের বহির্নোঙ্গরে ছিল। এতে করে জাহাজটিকে বন্দরে পণ্য খালাসের অনুমতি দিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে রাশিয়া। তবে তাতে রাজি হয়নি পররাষ্ট্র এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা রাশিয়াকে বলেছি যে, এ জাহাজ থেকে মালপত্র গ্রহণ করা সম্ভব নয়। ফলে অন্য কোনো উপায় অবলম্বন করতে হবে। রাশিয়া জাহাজ পরিবর্তন করে পণ্য বাংলাদেশে পৌঁছে দিতে রাজি হয়েছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তথ্য আসার পর বাংলাদেশ জাহাজটিকে ভিড়তে না দেয়ার সিদ্ধান্ত স্থানীয় এজেন্টকে জানিয়ে দেয়। পরে বিষয়টি নিয়ে ২২ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব খুরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকার রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি। রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়, নিষেধাজ্ঞায় থাকা জাহাজ বাংলাদেশ বন্দরে ভিড়তে দেবে না।

বাংলাদেশ রূপপুরের পণ্য খালাসের জন্য বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সব সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রকল্প এলাকায় পণ্য পরিবহনের দায়িত্ব স্থানীয় এজেন্টের। তারা কীভাবে পণ্য নিয়ে আসবে এটি তাদের বিষয়। ফলে এ সুনির্দিষ্ট জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের জন্য অন্য ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়।

কিন্তু নিষেধাজ্ঞায় থাকা জাহাজ ভিড়তে দিয়ে ঝুঁকি নেবে না ঢাকা। জানিয়ে দেয়া হয়, নিষেধাজ্ঞা যেহেতু রাশিয়ার ওপর, ফলে বিষয়টি তাদের সমাধান করতে হবে।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি মেগা প্রকল্প। আমরা সেটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। আমেরিকান নিষেধাজ্ঞার আওতায় জাহাজটি আছে- বিষয়টি জানা ছিল না। এখন যেহেতু নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানা হয়েছে, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’

জাহাজটির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকার রাশিয়া দূতাবাস জানায়, এ বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই। তারা পররাষ্ট্র অথবা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আমেরিকা থেকে জানানো হয়েছে, তাদের নিষেধাজ্ঞায় থাকা কোনো জাহাজকে তৃতীয় দেশ সুযোগ-সুবিধা দিলে সেই দেশও নিষেধাজ্ঞা ঝুঁকিতে পড়বে। আবার রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাহাজটি খালাস না করলে তা দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যেহেতু এটির দায়িত্ব স্থানীয় এজেন্টের, তাই জাহাজটি ভিড়তে দেয়া হয়নি।

এ বিভাগের আরো খবর