সাধারণ যাত্রীর জন্য খুলে দেয়ার প্রথমদিনই মেট্রোট্রেনে উঠার জন্য কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসেছে পুষ্পা। দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী পুষ্পা বাবার কাছে বায়না ধরেছে মেট্রোরেলে উঠবে। বাবা আলাউদ্দিন মেয়েকে মেট্রোরেল উঠাবেন বলে কথা দেন। বাবার সেই আশ্বাসে সারারাতই ঘুমায়নি মেয়ে। শুক্রবার সকালে উঠেই বাবার হাত ধরে এসেছে ট্রেনে চড়তে।
আলাউদ্দিন বলেন, ‘মেয়ে বায়না ধরেছে মেট্রোরেলে উঠবে। বার্ষিক পরীক্ষার পর ছুটি পেয়েছে। সেই সুযোগে তাকে কালকে কিশোরগঞ্জ থেকে নিয়ে এসেছি।’
‘রাতে উত্তরায় এক আত্মীয়ের বাসায় ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মেয়ে জেগে আছে। এরপর সকাল সাড়ে ছয়টায় বাসা থেকে বের হয়েছি। এখন প্ল্যাটফর্মে এসে টিকিট পেয়ে দারুণ খুশি মেয়ে। দেশের মাটিতে মেট্রোরেলে উঠব এ খুশির অন্ত নেই।’সাধারণ যাত্রী নিয়ে প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার সকালে মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর ও আগারগাঁও স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ে।
এর আগে দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন। প্রাথমিকভাবে এই রুটে ট্রেন চলছে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
মেট্রোতে চড়তে ছেলের সঙ্গে এসেছেন আব্দুস ছামাদ। ছবি: নিউজবাংলা
প্রথমদিনই মেট্রোট্রেনে চড়তে বহু মানুষ আসেন। ভোর থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ান তারা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাইন আরও দীর্ঘ হয়। প্রথমদিনই অনেকেই উঠেছেন ট্রেনে। তুলেছেন সেলফি, প্রকাশ করেছেন উচ্ছ্বাস। আবার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায় অনেকেই ট্রেনে উঠতে না পেরে ফিরে গেছেন।
দ্বিতীয়দিন শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তরা ও আগারগাঁও প্রান্তে ফের যাত্রীদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। তারা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে ট্রেনে চড়ছেন।
শিক্ষক বাবা আব্দুস ছামাদকে মেট্রোট্রেনে উঠিয়ে গর্ববোধ করছেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ছেলে হাবিব উল্লাহ। মেট্রোরেলে উঠার জন্য শেরপুর থেকে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছেন আব্দুস ছামাদ। সকালে বাবাকে মেট্রোতে উঠাতে নিয়ে এসেছেন। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে উঠে আগারগাঁও পৌঁছান তারা। এসময় নিউজবাংলার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় তার।
আব্দুস ছামাদ বলেন, ‘খুবই আনন্দ লাগছে। দেশের জন্য আমাদের গর্ব।’
মেট্রোট্রেন ঢাকা শহরের যানজটের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেবে বলে মনে করেন তিনি।
দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বুধবার উদ্বোধন করা হয় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।