নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোসহ ১০ দফা দাবিতে রাজধানীতে বিএনপি যে মিছিল কর্মসূচির ডাক দিয়েছে, সেখানে পুলিশের নিরাপত্তার তেমন কড়া আয়োজন চোখে পড়েনি। তবে বিএনপির মিছিল যে এলাকা থেকে শুরু হবে, তার কাছে নাইটিঙ্গেল মোড়ে অবস্থান নেয়া এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তাদের বিপুল সংখ্যক সদস্য সেখানে মোতায়েন করা হবে। সংখ্যাটি ১৫ হাজার বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বিএনপির এই মিছিল শুরু হবে দুপুর দুইটা থেকে। নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি বিজয়নগর, কাকরাইল, মালিবাগ মোড় হয়ে যাবে মগবাজার পর্যন্ত। এরপর ফিরতি পথে একই রুট দিয়ে যাবে নয়াপল্টনে।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই নেতা-কর্মীরা নগরীর নানা প্রান্ত থেকে আসতে শুরু করেন নয়াপল্টনে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এসেছেন ঢাকার বাইরে থেকেও।
গত ১০ ডিসেম্বরের বিভাগীয় সমাবেশের পর এটিই রাজধানীতে বিএনপির সবচেয়ে বড় কর্মসূচি, যদিও এর আগে ১৩ ডিসেম্বর সমাবেশ ও মিছিল এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় মিছিলেও দলটির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেয়।
১০ ডিসেম্বরের বিভাগীয় সমাবেশের আগে যে টানটান রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা গেছে, পরের কর্মসূচিগুলোতে সেগুলো অনুপস্থিত। আর নিরাপত্তার আয়োজনও ১০ ডিসেম্বরের তুলনায় খুবই কম। পরের তিন কর্মসূচির অনুমতি পেতেও দলটিকে কোনো ঝামেলায় পড়তে হয়নি। যেখানে তারা চেয়েছে, সেখানেই তা পালনের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
শুক্রবার সকাল থেকে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের অবস্থান দেখা যায়নি। তারা মূলত বিজয়নগরের নাইটিঙ্গেল এবং ফকিরাপুল মোড়ে, যে পথ দিয়ে নেতা-কর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন নয়াপল্টনে।
এই মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে কাউকে তল্লাশির মুখে পড়তে হয়নি। কোনো বাধার অভিযোগও করেনি কেউ।
নাইটিঙ্গেল মোড়ে পুলিশকে চেয়ারে বসে খোশগল্প করতে দেখা গেছে। কারও হাতে লাঠি, কারও হাতে রাইফেল। তবে নেই কোনো সাঁজোয়া বহরও। আর সংখ্যায়ও তারা বেশ কম।
সেখানে অবস্থানকারী ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে জানিয়েছেন, মিছিলটি যে পথ দিয়ে যাবে এবং ফিরে আসবে, তার পুরোটা জুড়েই মোতায়েন থাকবে সদস্য। সব মিলিয়ে ১৫ হাজার সদস্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুপুরের পর বিএনপির মিছিল বের হলেই পুলিশ সদস্যদেরকে দেখা যাবে।
তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ মিছিল করলে আমরা তাদের সাহায্য করবো। তবে সংঘর্ষের চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেব।’
বিএনপির এই মিছিলের কারণে নাইটেঙ্গল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বলে তাতে তেমন কোনো ভোগান্তি দেখা যায়নি। সড়কে যান চলাচল একেবারেই কম।
বিএনপির এই মিছিল শুরু হবে দুপুর দুইটায়।
গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় দলটির বিভাগীয় সমাবেশে এই মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সেদিন তারিখ ঠিক করা হয় ২৪ ডিসেম্বর। সেদিন সারা দেশে কর্মসূচি পালিত হলেও ঢাকারটা স্থগিত করা হয়।
একই দিন রাজধানীতে ছিল আওয়ামী লীগের ২২ তম জাতীয় সম্মেলন। সেদিন সারা দেশ থেকে আসে নেতা-কর্মীরা। এই দিন ঢাকায় মিছিলের ডাক দেয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে ক্ষমতাসীন দল। এরপর বিএনপি কর্মসূচি পিছিয়ে দেয় ছয় দিন।