ভোটের ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দিনাজপুরের বিরলে ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুরের পাশপাশি আহত হন অন্তত ১৫ জন। পরে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
বিরল পৌরসভা ও রাজারামপুর ইউনিয়নের আলদা দুটি কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা এবং রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
দিনাজপুরের বিরল পৌরসভায় মেয়র পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবুজার সিদ্দিক সাগর নির্বাচিত হওয়ায় ভোট হয়নি। ৯ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪ জন ও ৩টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
আর রাজারামপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ২ জন। সাধারণ সদস্য পদে ৩০ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিরল উপজেলার রাজারামপুর ইউনিয়নের কানাইবাড়ী কেন্দ্রে ফল ঘোষণার পর কিছু লোক কাগজপত্রে ভুল আছে দাবি করে কেন্দ্র ঘেরাও করে। এ সময় তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ও সরকারি মালামাল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সেখানে গেলে তাদের ওপরও হামলা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এই ঘটনায় পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
বিষয়টি জানতে একাধিকবার ইউএনও আফছানা কায়সারের সরকারি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিরল পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ফল ঘোষণার পর, হট্টগোল শুরু করেন পরাজিত প্রার্থীদের সমর্থকরা। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িতে করে নির্বাচনি সরঞ্জাম নিয়ে আসার চেষ্টা করলে প্রার্থীর সমর্থকরা ইট-পাটকেল ছুড়ে বাধা দেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়। আহত হন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ, পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ কমপক্ষে ৫ জন।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিন্নাহ আল মামুন বলেন, ‘দুটি ঘটনাই নির্বাচনের ফলকে কেন্দ্র করে। দুটি ঘটনায় পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সরকারি মালামাল রক্ষা ও নিজেদের নিরাপত্তায় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছি। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা মামলা করবেন।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ‘কেন্দ্র দুটিতে ফল ঘোষণার পর হামলা হয়েছে। আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল লতিফ (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী) আহত হয়েছেন। পুলিশ ও আনসার সদস্যরাও আহত হয়েছেন। হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা মামলা করেছেন।’