বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মেট্রোরেল নির্মাণে দেশীয় একমাত্র প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম

  •    
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:১৭

আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনউদ্দিন মোনেম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই প্রকল্পে বাংলাদেশের ১০০ জনেরও বেশি প্রকৌশলী কাজ করেছেন। নিরলস শ্রম দিয়েছেন দুই হাজারের বেশি দেশীয় শ্রমিক। তাদের সঙ্গে কাজ করেছেন ৪০ জন জাপানি প্রকৌশলী।’

ঢাকার দুঃসহ যানজট মোকাবিলায় সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প মেট্রোরেলে কাজ করে দেশের ১০০ প্রকৌশলীকে নতুন প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত করেছে আব্দুল মোনেম লিমিটেড। নতুন এই প্রযুক্তি আগে বাংলাদেশের হাতে ছিল না।

এর আগে এ ধরনের বড় বড় প্রকল্পগুলোতে বাংলাদেশি কোনো কোম্পানি কাজ করতে পারত না। অভিজ্ঞতাও বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর ছিল না। ফলে টেন্ডার প্রক্রিয়াতেই অংশ নিতে পারত না তারা।

আব্দুল মোনেম প্রথম বাংলাদেশি কোম্পানি যারা পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছে। পদ্মাসেতু প্রকল্পের পাঁচটি প্যাকেজের মধ্যে ৩টি প্যাকেজে এমন দায়িত্ব পালন করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। আর এবার মেট্রোরেল প্রকল্পেও মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে আব্দুল মোনেম।

আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনউদ্দিন মোনেম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন- ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। আমরা চাচ্ছি একটি স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির সহায়ক হিসেবে আমাদের কাজগুলোকে স্মার্ট করতে। স্মার্ট মানে একই রাস্তা কম সময়ে করা, উন্নত মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা।

‘এখানে যেসব শ্রমিক কাজ করেছে তাদের যদি কালভার্ট বা ব্রিজ করতে দেয়া হয় তাহলে কিন্তু সে নিজেই করে ফেলবে।’

দেশে প্রথম মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত ৩ দশমিক ১৯৫ কিলোমিটার উড়ালপথ ও তিনটি স্টেশনসহ অবকাঠামো তৈরি করেছে টেক্কেন করপোরেশন-আব্দুল মোনেম লিমিটেড-আবেনিক্কোর জয়েন্ট ভেঞ্চার।

২০১৮ সালের ১ আগস্ট এই কাজ শুরু হয়। এ অংশটুকু বাস্তবায়নে ব্যয় হয় ১ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। ডিসেম্বর পর্যন্ত এই কাজের অগ্রগতি ৯৩ শতাংশ।

মঈনউদ্দিন মোনেম বলেন, ‘এই প্রকল্পে বাংলাদেশের ১০০ জনেরও বেশি প্রকৌশলী কাজ করেছেন। আর দুই হাজারের বেশি দেশীয় শ্রমিক কাজ করেছেন। এদের সঙ্গে কাজ করেছেন ৪০ জন জাপানি প্রকৌশলী।’

এ কাজ করতে গিয়ে কী নতুন প্রযুক্তি এসেছে সে বিষয়টির ব্যাখ্যা করেন আব্দুল মোনেম লিমিটেডের উপদেষ্টা সরকার মাহাবুব।

তিনি বলেন, ‘কুড়িল ফ্লাইওভার যখন নির্মাণ হয়েছে সে সময় কিন্তু আমাদের কোনো আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না। এমনকি যন্ত্রপাতিও ছিল না। রাস্তার পাশে এক দিক দিয়ে গাড়ি চলেছে আরেক দিক দিয়ে আমরা কাজ করেছি। রাতে ঢালাই করেছি।

‘মেট্রোরেল তৈরিতে আমরা প্রতিটি অংশ অন্য জায়গায় তৈরি করে সেগুলোকে বহন করে এনে মেট্রোরেলে ক্রেন দিয়ে সেট করেছি। আমরা কিন্তু মেট্রোরেলের এখানে কোনো ঢালাই করিনি। প্রতিটি অংশ তৈরি করেছি আমাদের কারখানায়।’

‘এক জায়গায় অংশ তৈরি করে সেটা বহন করে নিয়ে এসে তারপর সেটাকে জোড়া দিয়ে লাগানোর এই প্রযুক্তি আগে জানা ছিল না কোম্পানিগুলোর। এটি প্রিকাস্ট বক্স গার্ডার ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ইরেকশন প্রযুক্তি। এখানে তিনটি প্রযুক্তি রয়েছে- আগে তৈরি, তারপর পরিবহন এবং সবশেষে সেটি উঁচু করে সংযোজন। আর আগে যে প্রযুক্তি আমরা জানতাম সেটি হচ্ছে শুধু ঢালাই।’, বলেন সরকার মাহাবুব।

তিনি বলেন, ‘মেট্রো রেলের নিচ দিয়ে যখন যাবেন তখন দেখা যাবে ৬ ফুটের এক একটি অংশ আছে। কোথাও ৩০টি লেগেছে, কোথাও ৪০টি। এগুলো তৈরি করা হয়েছে বাইরে। পরে এনে একটার পর একটা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।

‘আমরা এটি জানতাম না, এবার শিখলাম। এর ফলে আমাদের প্রকৌশলীরা প্রশিক্ষিত হয়ে গেল। মাথার ওপর দিয়ে যে রেল যাচ্ছে সেটার কাজ আমরা শিখে গেছি। তবে মাটির নিচ দিয়ে যেটা হবে সেটা এখনও আমাদের আয়ত্তে আসেনি।’

ঢাকার দুঃসহ যানজট মোকাবিলায় সরকার মোট ছয়টি মেট্রোরেল করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মধ্যে এমআরটি-৬ এর একটি অংশ অর্থাৎ উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও অংশে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হয়েছে।

দিয়াবাড়ী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত রুটটি পুরোপুরি চালু হবে ২০২৫ সালের মধ্যে। ২০২৩ সালের শেষে চালু হওয়ার কথা আছে মতিঝিল পর্যন্ত রুট।

দিয়াবাড়ীতে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ডিপোর ভূমি উন্নয়নের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ।

এরপর একে একে শুরু হয় ডিপোর অবকাঠামো উন্নয়ন, মূল উড়াল পথ ও স্টেশন নির্মাণ, বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা স্থাপন এবং ইঞ্জিন-কোচ সংগ্রহের কাজ।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

সার্বিক নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের জন্য সাতটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জয়েন্ট ভেঞ্চারকে নিযুক্ত করেছে সংস্থাটি। সে প্রতিষ্ঠানগুলোই গড়ে তুলছে উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইন-৬।

এ বিভাগের আরো খবর