বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কর কর্মকর্তার ‘ঘুষ নেয়ার’ ভিডিও ফাঁস

  •    
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০৭

১০ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের ফাঁস হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, দুই রাজস্ব কর্মকর্তা এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ঘুষ নিয়ে দর-কষাকষি করছেন। এমনকি চাহিদামতো প্রতি মাসে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাসোহারার টাকাও চাইছেন।

কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ মাদারীপুর সার্কেল অফিসের দুই রাজস্ব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দুই কর্মকর্তার ঘুষ নেয়ার দৃশ্য উঠে এসেছে। ১০ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের ফাঁস হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, দুই রাজস্ব কর্মকর্তা এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ঘুষ নিয়ে দর-কষাকষি করছেন। এমনকি চাহিদামতো প্রতি মাসে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাসোহারার টাকাও চাইছেন।

তবে ভিডিও তাদের না এবং বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইমরান কবীর (সার্কেল-১) ও রফিকুল ইসলাম (সার্কেল-২)।

‘মাদারীপুর সমাচার নামে একটি ফেসবুক পেজে প্রচার হওয়া ভিডিওর শুরুতে এক ব্যবসায়ীকে কর কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এইডা কী আনছেন? পরে ৫০০ টাকার কয়েকটি নোট হাতে গুনে পকেটে ভরেন রফিকুল। এরপর রাজস্ব কর্মকর্তা রফিকুল ওই ব্যবসায়ীকে বলেন, কী যে করেন আপনারা? মানে.. মাদারীপুরের লোক এত ধনী, দেশের মধ্যে তৃতীয় ধনী জেলা। আপনারা কেন এমন করেন?’

একপর্যায় ব্যবসায়ীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যা দিছেন আমি এটা নিতে পারব না। এটা ইমরান সাহেবকে কী দেব? আমি কিভাবে বুঝাব? স্যার তো বকবে! আমি এটা নিতে পারব না। এই তিন হাজার আমি নিতে পারব না। বাকিটা কখন দেবেন? আপনারা স্যারকে বলে যান, দেখা করে যান। কারণ তিনি (ইমরান কবীর) আপনার অরজিনাল স্যার। সেই আপনাকে বাঁচাতে পারবে, মারতে পারবে, বুঝছেন?

কর কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম

শেষ কথায় রফিকুল ইসলাম ওই ব্যবসায়ীকে বলেন, ‘প্রতি মাসে অফিস খরচ এক হাজার টাকা দিয়ে যাবেন। এটা যেন আর না বলা লাগে। কথা যেন নড়চড় না হয়। মাসের ১০ তারিখের মধ্যে টাকা আমার কাছে দিয়ে যাবেন।’ভিডিওটির ৮ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড পর দেখা যায়, রাজস্ব কর্মকর্তা (সার্কেল-১) মো. ইমরান কবীরকে। তিনি ওই ব্যবসায়ীকে বলেন, ‘আপনার দোকানের আশপাশে যারা দিচ্ছে ওয়েল অ্যান্ড গুড। আর যারা দিচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আপনার নম্বর দিয়ে যান। পরে ওই ব্যবসায়ী এক হাজার টাকা ইমরান কবীরের টেবিলে রাখলে তিনি টাকা গ্রহণ করেন।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিওতে থাকা ওই ব্যবসায়ীর নাম অমিত হাসান। তিনি মাদারীপুর পুরান বাজারের পোশাক ব্যবসায়ী।

জানতে চাইলে ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমার ছোট পোশাকের দোকান। প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভ্যাট দিতে বলেন স্যারেরা। পরে অফিসে গেলে তারা এক হাজার টাকা করে ভ্যাট দেয়ার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু শর্ত হলো, প্রতি মাসে অফিসে তিন হাজার টাকা দিতে হবে।’

কর্মকর্তা মো. ইমরান কবীর

ভিডিও সম্পর্কে রাজস্ব কর্মকর্তা (সার্কেল-১) মো. ইমরান কবীর বলেন, ‘ভিডিওটি আমাদের না, এটি সাজানো। এ বিষয় আমার আর কোনো মন্তব্য নেই।’

রাজস্ব কর্মকর্তা (সার্কেল-২) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ব্যবসায়ী আমার কাছে আসার পর তাকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে বলেছিলাম, তার কাছে কোনো অনৈতিক দাবি করা হয়নি। ঘুষ দাবির ভিডিওতে কথোপকথনগুলো ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ।’

জানতে চাইলে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাটের মাদারীপুর সার্কেলের বিভাগীয় কর্মকর্তা ও ডেপুটি কমিশনার মো. এনামুল বলেন, ‘আপনারা তো এসেছিলেন। নিউজ করে দেন, অসুবিধা নেই।’

ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন বলেন, ‘দুই রাজস্ব কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণের ভিডিওটি আমি দেখেছি। পুরো ঘটনা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর