রংপুর সিটি করপোরেশনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের ‘দুর্বলতার’ প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিকেল চারটার পরও কয়েক ঘণ্টা ভোট চলার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সভায় বক্তব্য রাখছিলেন এই বিএনপি নেতা।
‘রাষ্ট্র মেরামতে’ বিএনপির দেয়া ২৭ দফা রূপরেখা নিয়ে এই সভার আয়োজন করে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ড্যাব।
এ সময় নজরুল ইসলাম খান কথা বলেন মঙ্গলবার রংপুর সিটি করপোরেশনের ভোট নিয়ে। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম কী জিনিস, তা মানুষ টের পেয়েছে। আজকে দেশের প্রধানমন্ত্রী দুর্ভিক্ষের কথা বলেন। আবার ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ইভিএম কিনতে চাচ্ছেন।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশের ৩০০ আসনের অর্ধেকে ইভিএমে ভোট নেয়ার চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। এ জন্য প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকায় নতুন ২ লাখ ইভিএম কিনতে চায় তারা। তবে এখনও প্রকল্প অনুমোদন করেনি সরকার।
বিএনপি ইভিএমে ভেটে নেয়ার বিরোধী। তাদের অভিযোগ এই যন্ত্রে দূর থেকে কারচুরি করা সম্ভব।
নজরুল ইসলাম খানের অভিযোগ, সরকার দলীয়করণের মাধ্যমে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস ও নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। সে কারণে এসব মেরামতের বিকল্প কিছু নেই।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকার জনগণকে ভোট দেয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। অথচ তারা নাকি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাহলে জনগণ ভোট দিল কোথায়?
‘আগের রাতেই ভোটের বাক্স ভর্তি করা হয়েছে, যা সারা বিশ্বের লোকজন বলেছে, নির্বাচন কমিশনার নিজেও বলেছে। ২০১৪ সালে তো ভোটকেন্দ্রে ভোটার খুঁজে পাওয়া যায়নি।’
গণতন্ত্রের অবস্থা কী- এই প্রশ্ন রেখে বিএনপি নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রধান বাহন হলো নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে বাংলাদেশে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। বিরোধী দলের প্রার্থীকে ভোট করতে দেয়া হয় না। প্রচার চালাতে দেয় না। অর্থাৎ ভোট ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।’
বিরোধী দলগুলো সভা-সমাবেশ করতে পারে না অভিযোগ করে নজরুল বলেন, ‘প্রধান বিরোধী দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্যরা কারাগারে বন্দি। কোথায় আজকে ন্যায়বিচার? চারবার আবেদনের পরও জামিন নাকচ করেছে।’
বিচার বিভাগ কতটা স্বাধীন- এই প্রশ্নও করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘আমরা এসব বন্ধ করার লক্ষ্যেই রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা করেছি। ২৭ দফায় বিভিন্ন কমিশন ও কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। সেসব করা হবে যোগ্য ও দক্ষ লোকদের দিয়ে।
‘আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা নিয়ে আরও যদি কারও কোনো প্রস্তাব থাকে সেগুলো বিবেচনা করা হবে।
ড্যাবের সভাপতি হারুন আল রশিদের সভাপতিত্ব ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মেহেদী হাসান ও দপ্তর সম্পাদক ফখরুজ্জামান ফখরুলের পরিচালনায় আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার, ইসমাইল জবিউল্লাহ ও বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন।