মেট্রোট্রেনে যাত্রী চলাচল শুরুর প্রথম দিন টিকিট কাটতে গিয়ে যে ভোগান্তি ও সমস্যা দেখা দিয়েছে, সে জন্য যাত্রীদের অনভ্যস্ততাকে দায়ী করেছেন রেল পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড বা ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক।
তিনি বলেন, ‘সবাই অনেকক্ষণ লাইনে থেকে কষ্ট করার পরও যখন ট্রেনে উঠছে, তখন সবাইকে খুশি দেখে আমার ভালো লাগছে। অনেকে কিছু সমস্যায় পড়লেও তারাই বলছে তাদের ভুলের কারণেই এটা হচ্ছে। কেউ বলছে না আমাদের সমস্যার কারণে তারা সমস্যায় পড়েছে।
‘বলা হয়েছিল সিঙ্গেল যাত্রার জন্য ১০০ টাকার বেশি না দেয়ার জন্য। কিন্তু মানুষ ৫০০, এক হাজার টাকাও দিচ্ছে। অনেকে অনেক পুরোনো টাকা মেশিনে দিচ্ছে। এ কারণে মেশিন অনেক সময় কাজ করছে না।
‘তবে আশা করি, মানুষ এই সিস্টেমের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেলে, বেশিরভাগ মানুষ এমআরটি পাস নিয়ে নিলে টিকিট কাটায় সময় বেশি নষ্ট হবে না। তখন বেশি যাত্রী চলাচল করতে পারবে।’
বুধবার উদ্বোধন হলেও বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সাধারণ যাত্রী নিয়ে চলাচল করে দেশের প্রথম মেট্রোরেলের ট্রেনগুলো।
প্রথম দিন যাত্রার সাক্ষী হতে সকাল থেকেই বিপুলসংখ্যক মানুষ উত্তরার দিয়াবাড়ী ও আগারগাঁও স্টেশনে ভিড় করে। তবে সবাই ট্রেনে উঠতে পারেনি।
আগে থেকেই জানিয়ে দেয়া হয়, একেকটি ট্রেনে দুই শর বেশি যাত্রী নেয়া হবে না। তবে প্রথম দিকে তোলা হয় এক শ যাত্রী, পরে বেড়ে হয় দেড় শ।
আর এই যাত্রীরা টিকিট কাটতে এবং সেই টিকিট নিয়ে প্ল্যাটফর্মে যেতে স্লট মেশিনে গিয়ে পড়ে ভোগান্তিতে।
দুটি স্টেশনে আছে মোট ১২টি ভেন্ডিং মেশিন। সেখানে টাকা দিলেই বের হওয়ার কথা টিকিট। কিন্তু টাকা দেয়ার পর বেশ কিছু মেশিন বন্ধ হয়ে যায়। মেট্রোরেলের কর্মীরা মেরামত করতে পারে কয়েকটি, কয়েকটি কাজই করেনি।
এরপর ম্যানুয়ালি টিকিট কাটতে বলা হয়। কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে নিয়ে সেটি কার্ড স্লট মেশিনে দেয়ার পর কাজ করেনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে। ফলে যাত্রীরা প্ল্যাটফর্মে যেতে পারেনি। পরে পাশের বুথে গিয়ে ম্যানুয়ালি কম্পিউটারে এন্ট্রি করার পর পাঞ্চ করলে সেটি কাজ করেছে। এতেও হয়েছে সময়ের অপচয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক আগারগাঁও স্টেশন পরিদর্শনে এসে বলেন, ‘এর আগে আমরা যা বলেছি বা আপনারা যেভাবে নিউজ করেছেন, আজ সব কিছু সেভাবে চলছে না। এর কারণ হলো মানুষ এই পরিবহনের সঙ্গে অভ্যস্ত না। আমরা আগে বলেছিলাম, প্রতি ট্রেনে ২০০ যাত্রী পরিবহন করব। কিন্তু আজ পারছি না।
‘নিচের লাইনে অনেক মানুষ থাকলেও টিকিট কাটার সময় বেশি লাগছে। যার কারণে ট্রেনে বেশি যাত্রী যেতে পারছে না। এ ছাড়া টিকিট মেশিনেও কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’
আপাতত ট্রেনের শিডিউলের কোনো পরিবর্তন হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন পর আমরা রিভিউ মিটিংয়ে বসব। সেই মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী সিডিউল নির্ধারণ করা হবে।’
তবে দুপুর ১২টার পর ট্রেন বন্ধ হলেও যাত্রীরা রাত ১০টা পর্যন্ত দুই স্টেশন থেকে এমআরটি পাস কিনতে পারবেন। তবে সেখানে কোনো সিঙ্গেল জার্নির টিকিট বিক্রি হবে না।