বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফার্মগেট মেট্রো স্টেশনে হবে ৭ জাপানির ভাস্কর্য

  •    
  • ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১০:০০

‘২০১৪ সালের এই সফরের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ছিলো জাপান সফর। জাপানি সহযোগিতার যতো প্রকল্প সবই সেই সফরের ফসল। সেখানেও গল্প আছে যা হয়তো কখনও বিস্তারিত বলা হবে না। কিন্তু মেট্রোরেলের ডিজাইন এবং সমীক্ষার কাজ শুরুর পরপরই ঘটে গেলো হোলি আর্টিজানের হৃদয়বিদারক ঘটনা।’

রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত সাত জাপানি প্রকৌশলীর স্মরণে মেট্রোরেলের ফার্মগেট স্টেশনে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

মেট্রোরেল উদ্বোধনের আগে হোলি আর্টিজান হামলা ও সেই হামলায় নিহত জাপানিদের স্মরণ করে তিনি ফেসবুকে এক পোস্ট দেন।সেখানে তিনি আংশিক তুলে ধরেছেন হোলি আর্টিজান হামলার পর মেট্রোরেল নিয়ে চ্যালেঞ্জ উৎরানোর গল্প।

উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বুধবার উদ্বোধন হবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লিখেছেন, “একটা বড় প্রকল্পের পেছনে ছোট-বড় মিলিয়ে অনেক গল্প থাকে। কিছু গল্প তৈরিতে ছোটখাটো অবদান, সাক্ষী হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে।

‘কর্ণফুলী টানেলের গল্পটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রাক্তন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আংশিক বলেছেন। অনেক রাতে যখন সিদ্ধান্ত হলো যে চায়না সহযোগিতা করবে সেইদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে তার আবাসস্থলে পৌঁছে যখন ফিরে আসব তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন ‘ওরা চুক্তিপত্র তৈরিতে কাজ শুরু করেছে, যত রাতই হোক আমাদের এখানে যদি চুক্তি স্বাক্ষরে তারা রাজি হয় তাহলে আমার এখানে নিয়ে এসো। আমি বললাম রাত দুইটা বেজে যেতে পারে। উনি আবার বললেন ‘অসুবিধা নেই, আমি জেগে থাকব’। ওনাকে আশ্বস্ত করে দ্রুত ফিরে আসলাম।

‘চুক্তিপত্র তৈরি হয়ে গেল রাত পৌনে দুইটার দিকে। আমরা ৫-৬ জন আবার হাজির হলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আবাসে। তার উপস্থিতিতেই স্বাক্ষর হলো ঐতিহাসিক সেই কাঠামোর চুক্তি’।”

২০১৪ সালের এই সফরের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ছিল জাপান সফর। জাপানি সহযোগিতার যত প্রকল্প সবই সেই সফরের ফসল বলে জানান শাহরিয়ার আলম।

তিনি বলেন, মেট্রোরেলের ডিজাইন এবং সমীক্ষার কাজ শুরুর পরপরই ঘটে গেল হোলি আর্টিজানের হৃদয়বিদারক ঘটনা।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হোলি আটিজানে জঙ্গি হামলায় সাত জাপানি প্রকৌশলী নিহত হন। তারা মেট্রোরেলের সমীক্ষা কাজের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকার যানজট ব্যবস্থাপনা নিয়েও গবেষণা করছিলেন।

এরপরের স্মৃতিচারণ করে শাহরিয়ার আলম লেখেন, ‘সব কাজ বন্ধ হয়ে গেল। সাতটি জাপানিজ পরিবারের সঙ্গে রোজা রেখে রাত এগারোটা থেকে পরদিন প্রায় দুপুর বারোটা পর্যন্ত মৃতদেহ হস্তান্তরের দীর্ঘ কাজটি ছিল আমার জীবনের কঠিন এবং উল্লেখযোগ্য কাজ। তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সেটার বিস্তারিত বলা যাবে না। সাত জনের মধ্যে প্রায় সবাই এই প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন।

‘জাপানের যে কারও সফর স্থগিত হয়ে গেল। আমরা পথ খুঁজছি কীভাবে তাদের আশ্বস্ত করা যায়, বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা যায়...আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করল। তারপর আসলো কোভিডের ধাক্কা। দুটো বড় আঘাত সহ্য করতে হয়েছে মেট্রোরেল প্রকল্পকে। সময় বেড়েছে, খরচও বেড়েছে।

হোলি আর্টিজানে নিহত সাত জাপানির নামে স্টেশনগুলোর নাম করার প্রস্তাব করা হয় বলে জানান শাহরিয়ার আলম। তিনি লেখেন, এতে সব পরিবারের সম্মতির প্রয়োজন ছিল। পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে ফার্মগেট স্টেশনে তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাস্কর্য নির্মাণের। তারা কেউ শেষ দেখে যেতে পারলেন না। কিন্তু সেই রাতে গভীর শোকে মুহ্যমান কিছু কিছু পরিবার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন আবার আসার। গত সফরেও আমরা তাদের সবার সঙ্গে দেখা করেছি। সামনের সফরেও হয়তো দেখা হবে।’

সাত জাপানি প্রকৌশলীর আত্মার শান্তি কামনা করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

এ বিভাগের আরো খবর