বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মেট্রোরেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষা

  •    
  • ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৯:২৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বেলা ১১টা ১ মিনিটে উত্তরায় ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এর মধ্য দিয়ে উন্মোচন হবে রাজধানীতে যোগাযোগব্যবস্থার নতুন অধ্যায়।

বাংলাদেশের মানুষের আরেকটি স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষা। পদ্মা সেতুর পর এবার উদ্বোধন হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বেলা ১১টা ১ মিনিটে উত্তরায় ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

এর মধ্য দিয়ে উন্মোচন হবে রাজধানীতে যোগাযোগব্যবস্থার নতুন অধ্যায়।

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বুধবার উদ্বোধন হচ্ছে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

উত্তরা-মিরপুর এলাকার সর্পিল রেলপথ, সুদৃশ্য স্টেশন এবং ঝকঝকে রাস্তা তাক লাগিয়ে দিচ্ছে চোখে।

প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন দুর্বিষহ দিন পেছনে ফেলে উচ্ছ্বসিত মানুষ। ইতিহাসের অংশীদার হতে প্রতীক্ষায় সবাই।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রভাব সুদূরপ্রসারী এবং বহুমুখী।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ‘নগর পরিস্থিতি-২০১৬: ঢাকা মহানগরে যানজট-শাসন-ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক গবেষণায় বলা হয়, ২০০৪ সালে ঢাকার রাস্তায় প্রতি ঘণ্টায় গাড়ির গতিসীমা ছিল গড়ে ২১ দশমিক ২ কিলোমিটার, বর্তমানে তা ঘণ্টায় ৬ দশমিক ৮ কিলোমিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। যানবাহনের পরিমাণ যদি একই হারে বাড়তে থাকে এবং তা নিরসনের কোনো উদ্যোগ না নেয়া হয়, তাহলে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ২০২৫ সালে এই শহরে যানবাহনের গতি হবে ঘণ্টায় চার কিলোমিটার, যা মানুষের হাঁটার গতির চেয়ে কম।

অর্থনীতির গবেষক বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, মেট্রোরেল ঢাকায় তীব্র যানজট সমস্যার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

তার ভাষ্য, ‘ঢাকায় মেট্রোরেল চালু করার আত্মতৃপ্তি নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। ঢাকার মতো চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহরেও এই সেবা চালু করতে হবে। তাহলেই ঢাকার ওপর মানুষের চাপ কমবে; রাজধানীর বাইরেও ঢাকার মতো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।’

দেশের অবকাঠামো খাত নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক জায়েদ বখত। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেট্রোরেল এককভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কতটা অবদান রাখবে, সে বিষয়ে কোনো গবেষণা এখনও কেউ করেনি। অনেকেই বলছেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল এবং চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল দেশের জিডিপিতে ২ শতাংশ যোগ করবে, তবে আমার বিবেচনায় মেট্রোরেলের বিষয়টি পদ্মা সেতু ও কর্ণফুলী টানেলের চেয়ে আলাদা।

‘মেট্রোরেল রাজধানীর দুই-আড়াই কোটি মানুষের সময় সাশ্রয় করবে। মানুষ দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারবে। বেশি বেশি কাজ করতে পারবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি বেড়ে যাবে। মোট কথা অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে মেট্রোরেল।’

মেট্রো ট্রেনে বসার আসন ৩১২, দাঁড়ানোর ১৯৯৬

মেট্রো ট্রেনের প্রতিটি কোচ তৈরি হয়েছে স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে। জাপানের বিখ্যাত কাওয়াসাকি হেভি ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি বাংলাদেশের এমআরটি-৬ এর জন্য ২৪টি ট্রেন তৈরি করছে। এগুলোর প্রতিটিতে থাকবে ছয়টি করে কোচ। এর মধ্যে নভেম্বর পর্যন্ত দেশে এসেছে ১৯টি ট্রেন।

বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ লাল-সবুজের রঙের ছোঁয়া রয়েছে ট্রেনের কোচগুলোতে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীর চাপ বাড়লে আগামীতে প্রতিটি ট্রেনে আর দুটি করে কোচ যোগ করা হতে পারে, সে ক্ষেত্রে প্রতিটি ক্রেনে কোচ সংখ্যা হবে আট। বিষয়টি মাথায় রেখেই মেট্রোরেলের প্ল্যাটফর্মের নকশা করা হয়েছে।

ট্রেনের দুই প্রান্তের দুটি কোচকে বলা হয় ট্রেইলর কার, যেখানে থাকবেন চালক। এ দুটি কোচের প্রতিটিতে ৪৮ জনের বসে এবং ৩২৬ জনের দাঁড়িয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে। আর মাঝখানের চারটি কোচের প্রতিটিতে ৫৪ জন বসে এবং ৩৩৬ জন দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন।

সব মিলিয়ে ছয় কোচের একটি ট্রেনে বসে এবং দাঁড়িয়ে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০৮ জন যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। এর মধ্যে সব মিলিয়ে বসার সুযোগ পাবেন ৩১২ জন।

মেট্রো স্টেশনে ট্রেনে চড়ার সময় ১ মিনিট

স্বপ্নের মেট্রো ট্রেনে সাধারণ মানুষের চলাচল শুরু হবে বৃহস্পতিবার।

শুরুতে উত্তরা প্রান্ত থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অনেকগুলো স্টেশন থাকলেও কোথাও দাঁড়াবে না ঢাকা শহরের নতুন এই গণপরিবহন। শুরুর দিকে ট্রেনের সংখ্যাও থাকবে বেশ কম।

২০২৩ সালের ২৬ মার্চ পূর্ণাঙ্গরূপে শুরু হবে এ সেবা। তখন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে প্রতিটি স্টেশনে ৪৫ সেকেন্ড ট্রেন থামানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের, তবে মানুষের অভ্যস্ততা তৈরির সুযোগ দিতে এই সময় এক মিনিটের মতো করা হতে পারে।

আপাতত উত্তরা থেকে আগারগাঁও বা আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত বিরতিহীন যাত্রী সেবা পেতে গুনতে হবে ৬০ টাকা। ১০ মিনিট পরপর ট্রেন আসবে।

এ বিভাগের আরো খবর