প্রকৌশলী ইনামুল হককে লাঞ্ছনার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৩২ নাগরিক।
মঙ্গলবার বিষয়টি নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সমন্বয়ক ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার নিয়ে কথা বলায় শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন ইনামুল হক। এ হামলায় একটি স্বাধীন-স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমরা গভীরভাবে বেদনাদাহত, বিক্ষুব্ধ ও স্তম্ভিত।
‘এটা নিছক ব্যক্তির ওপর হামলা নয়, এর সঙ্গে অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার প্রশ্নটি জড়িত। আমরা ৩২ জন নাগরিক এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সে সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গকে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
‘নদী ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রবীণ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হকের অবদান সর্বজনবিদিত। আমরা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি যে ২৪ ডিসেম্বর ইনামুল হক শাহবাগে কয়েকজন সহযোগীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় নির্বাচন ও গণতন্ত্রের সংকট নিয়ে আলাপ করছিলেন ও গণসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করছিলেন। যে কোনো নাগরিকেরই দেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলা, সমালোচনা করা ও সভা-সমাবেশ করা সাংবিধানিক অধিকার।
‘এ সময় ইনামুল হককে যেরকম ন্যক্কারজনক শারীরিক লাঞ্ছনা ও হেনস্থা করা হয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে একজন নাগরিকের মতপ্রকাশের অধিকার ও সভা-সমাবেশের অধিকারের ওপর মারাত্মক আঘাত। একইসঙ্গে এমন আক্রমণাত্মক আচরণের মধ্য দিয়ে প্রতীয়মান হয় যে, পরমতসহিষ্ণুতার মতো মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসর থেকে ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, যা ভীষণ উদ্বেগের।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি যে জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র ও বাংলাদেশের সংবিধানে সংরক্ষিত স্বাধীন মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অঙ্গীকার সুরক্ষাসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে রাষ্ট্র ও সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হোক।
‘আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করছি, অবিলম্বে প্রকৌশলী ইনামুল হককে হেনস্থাকারী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। অন্যথায় এটি বিচারহীনতার আরেকটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- অধ্যাপক মাহবুব উল্যাহ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলি, অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মাহবুব হোসেন, মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন, অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, শামীমা সুলতানা, কবি আবদুল হাই শিকদার, অধ্যাপক কামরুন্নেসা খন্দকার, এম জাকির হোসেন খান, সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ, ড. মুনির উদ্দিন আহমেদ, প্রকৌশলী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, ড. মারুফ মল্লিক, সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, প্রভাষক সাইমুম রেজা তালুকদার, ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান, ব্যারিস্টার জিশান মহসিন, সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, শেখ রোকন, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, লেখক জাকারিয়া পলাশ, ডেন্টিস্ট জাফর মাহমুদ এবং লেখক সোহেল রানা।