চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে নবগঠিত ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে বিএনপি। এছাড়া সমমনা আরও সাত দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছে বিএনপি।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকেলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ও আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
জোটের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ এলডিপির (বিএলডিপি) শাহাদাত হোসেন সেলিম, মুসলিম লীগের (বিএমএল) শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় দলের রফিকুল ইসলাম, জাগপার ইকবাল হোসেন, এনডিপির আব্দুল্লাহ আল হারুন সোহেল, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম প্রমুখ।
বৈঠকের পর বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, বিএনপি তাদের সঙ্গে চলমান আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছে। জোটের নেতাদের মতামত নিয়েছে।
জোটের শীর্ষ দুই নেতা জানান, বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেছেন যে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে বর্তমান সরকারকে আর সময় দেয়া যায় না। এ অবস্থায় অতি দ্রুত সরকার পতনের লক্ষ্যে এক দফার আন্দোলনে যেতে হবে। সেই আন্দোলন রমজানের আগেই কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।
মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতারা কথা বলেছেন। তারা বিভিন্ন বিষয়ে মতামত নিয়েছেন। বিশেষত শুক্রবার ঢাকায় মিছিল ইস্যুতেও আলোচনা হয়েছে।
‘১২ দলীয় জোটের প্রতিটি দল আলাদা আলাদা ব্যানারে নিজস্ব নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল করবে। তারা বিজয়নগরে পানির ট্যাংকির সামনে থেকে মিছিল করে কাকরাইল মোড় হয়ে আবারও পানির ট্যাংকির সামনে শেষ করবে।’
লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘আমি বৈঠকে না গেলেও দলের মহাসচিব ছিলেন। বৈঠকে মূলত মিছিল সফল করা এবং পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
সমমনা সাত দলের সঙ্গে বৈঠক
এদিকে সন্ধ্যায় সমমনা আরও সাত দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছে বিএনপি। গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান রহমান মোস্তফা, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) খন্দকার লুৎফর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দল, ন্যাপ ভাসানী ও পিপলস লীগের প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপির নেতারা।
অবিলম্বে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত, সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় মিছিল করবে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো।
১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে ১০ দফা আন্দোলনের ঘোষণা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার ঢাকা ও রংপুর মহানগর বাদে সারা দেশে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে মিছিল করেছে বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো।