রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট শুরুর প্রথম সাড়ে তিন ঘণ্টায় ১০ শতাংশ ভোট পড়লেও এর দুই ঘণ্টা পরই তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশ। অর্থাৎ মাত্র দুই ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৩৫ শতাংশ।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এ ভোট চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। এ নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে বেলা সোয়া ২টার দিকে সাংবাদিকদের সর্বশেষ তথ্য দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এই সিটির ভোটে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণে ধীরগতির অভিযোগও এসেছে। তা মেনে নিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
নির্বাচনে কনকনে শীত উপেক্ষা করে ভোট দিতে আসেন ভোটাররা। ভোটাধিকার নিশ্চিতে ২২৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৮০৭টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে ইসি।
তবে গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে ভোটে সাংবাদিকরা মনিটরিং রুমে অবাধে প্রবেশ করতে পারলেও এবার সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করছে আউয়াল কমিশন।
নির্বাচনে দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন পুরুষ এবং দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন নারী ভোটার ২২৯টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। ভোটে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ১৬ জনের ফোর্স। আর সাধারণ কেন্দ্রে রয়েছে ১৫ জনের ফোর্স।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সিসিটিভির মাধ্যমে তথ্যচিত্র সংগ্রহ করেছি। ট্যাবের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করছি। আমাদের এভারেজ ফোরটি ফাইভ কাস্টিং হয়ে গেছে। এখনো প্রচুর ভিড় আছে।
‘যেহেতু ভোটটা একটু স্লো হয় এখানে, আগ্রহী ভোটারের সংখ্যা প্রচুর। সাড়ে ৪টার মধ্যে যারা এন্ড ক্লোসারের মধ্যে থাকবে, রাত যতই হোক তাদের ভোট নিতে হবে।’
প্রশাসন প্রথম থেকেই অত্যন্ত সহযোগিতা করে আসছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছেন। যার ফলে কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ঘটলেও সেটা মোকাবিলা করা সম্ভব।’
সংঘাত ছাড়াই মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে আসছে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘মানুষ দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে সংযমের সঙ্গে অপেক্ষা করছে, এটা একটা ভালো দিক। ভোটগ্রহণ খুবই সুশৃঙ্খল হচ্ছে। ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দঘন পরিবেশ পরিলক্ষিত হচ্ছে।’
মিডিয়াকে অবাধ সুযোগ দেয়া হয়েছে দাবি করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘তারা তৎপর আছেন। এই পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি, তাতে জানা গেছে, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারাও যথেষ্ট দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।’
জাপার প্রার্থীর ইভিএম বিতর্কে মন্তব্য করতে নারাজ সিইসি
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ইভিএম ও নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন।
এমন অভিযোগের বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে রাজি নন কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘জাপার প্রার্থীসহ একজনের ভোট দিতে অসুবিধা হচ্ছিল, পরে তারা দিতে পেরেছেন। আঙুলের ছাপ না মিললে অ্যালকোহল প্যাড দিয়ে পরিষ্কার করে ভোট দিতে পেরেছে। এখন কোনো মন্তব্য করব না। আরো তথ্য সংগ্রহ করার পর মন্তব্য করব।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বিকল হয়ে যাওয়ার অভিযোগের সত্যতা মেনে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘অভিযোগগুলো অসত্য নয়। আমরা আগেও বলেছি, ইভিএমের গতি জিনিসটা আপেক্ষিক। ইভিএম আর ব্যালটের গতি এক নয়। ইভিএমের একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারছেন না। এটা হচ্ছে ভালো দিক।’
মনিটরিংয়ের ফলটা ইতিবাচক বলে মনে করেন তিনি। বলেন, ‘যারা ভোট দিচ্ছেন, নিচ্ছেন সবাই জানেন কোনো রকম ম্যালপ্র্যাকটিস করা ঠিক হবে না। সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটর করার একটা প্রভাব পড়েছে।’