বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাল স্বাক্ষরে এজাহার পরিবর্তনের অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে

  •    
  • ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ২২:৫০

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্ত কমিটিও হয়েছে। তদন্তে ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

জাল স্বাক্ষর দিয়ে বাদীকে বিভ্রান্ত করে মামলার এজাহার পরিবর্তনের একাধিক অভিযোগ উঠেছে পাবনার সুজানগর থানার ওসি আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে।

এ ছাড়া আসামিদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে মামলার এজাহার থেকে নাম বাদ দেয়া, অভিযোগ না থাকলেও অতিরিক্ত নাম যুক্ত করে মামলা নথিভুক্ত করাসহ নানা অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এসব বিষয়ে তথ্য-প্রমাণসহ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগও করেছেন তারা।

সম্প্রতি পুলিশ সুপার বরাবর পাঠানো শাহজাহান ও আকাশ নামে ভুক্তভোগী দুজনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তও শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা পুলিশ।

উপজেলার ক্রোড়দুলিয়া গ্রামের শাহজাহান শেখের পাঠানো অভিযোগে জানা যায়, গত ১১ ডিসেম্বর সাগর হোসেন, শামীম ও মো. বাতেন নামে তিনজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও সহায়তার লিখিত অভিযোগ দেন শাহজাহান। এক দিন পর তাকে থানায় ডেকে আরেকটি এজাহার প্রয়োজন জানিয়ে ওসি আব্দুল হান্নান নতুন এজাহারে স্বাক্ষর করতে বলেন।

পরে শাহজাহান জানতে পারেন, নতুন এজাহার থেকে বাতেনকে বাদ দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে শাহজাহান শেখ বলেন, ‘আমি মূর্খ মানুষ। কোনো মতে নাম স্বাক্ষর করতে পারি। ওসি সাহেব থানায় ডেকে নতুন স্বাক্ষরের দরকার জানালে আমি সরল মনে সই করে দেই। কী লেখা আছে জিজ্ঞেস করলে তিনি লেখা সব আগের এজাহারের, শুধু আরেকটা কপি লাগবে বলে জানান। কিন্তু তিনি পরের এজাহারে বাতেনের নাম বাদ দিয়েছেন। সেই বাতেনই এখন আমার বাড়িতে এসে মামলা তুলে নিতে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমি এসপি স্যারের কাছে নিরপত্তা ও ন্যায়বিচার চাই।’

এদিকে আরেক ভুক্তভোগী উপজেলার বিলক্ষেতুপাড়া গ্রামের আশিকুর রহমান আকাশের অভিযোগ, গত ১০ ডিসেম্বর সুজানগর থানায় স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে দুজন আসামির নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে নিজ স্বাক্ষরে এজাহার জমা দেন তিনি। কিন্তু পরে তিনি জানতে পারেন ৫ জন নামীয় আসামির বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।

ওসি আব্দুল হান্নান নিজেই ওই এজাহার পরিবর্তন করেছেন বলে অভিযোগ আকাশের।

আকাশ বলেন, ‘আমাদের বন্ধু বান্ধবের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছিল। বিষয়টি আমার পরিবারকে জানালে তারা থানায় জানায়। তখন ওসি স্যার আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, যেহেতু ঝামেলা হয়েছে তা সমাধানের জন্য থানায় আসতে হবে। থানায় যাবার পরে তিনি আমাকে একটি কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। পরে শুনি সেটা নাকি মামলা হয়ে গেছে।’

আকাশ আরও বলেন, আমি দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলাম পরে জানতে পারি ৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে মামলার এজাহারের যে কাগজ পেয়েছি তাতে স্বাক্ষর ও তারিখ আমার হাতের লেখা নয়। হুবহু আমার হাতের লেখার মতো হলেও স্বাক্ষর জাল করে মামলা নেয়া হয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, চরাঞ্চলে নানা বিষয়ে স্থানীয়দের বিরোধ হয়। সেসব ঘটনার নিষ্পত্তি না করে আরও উসকে দিয়ে মামলা দায়ের ও প্রত্যাহরের নামে এক ধরনের বাণিজ্য করছে থানা পুলিশ। তারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত ও সুবিচারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

এদিকে সব অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেছেন সুজানগর থানার ওসি আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, ‘মামলায় কারো নাম যুক্ত করা বা বাদ দেয়াতে আমার কি লাভ? শাহজাহান ও আকাশের এজাহার পড়ে শুনিয়ে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। তার সিসিটিভি ফুটেজও আছে। শাহজাহান শেখের মামলায় বাতেনের নামে জিডি নেয়া হয়েছে। এগুলো বানোয়াট অভিযোগ।’

আকাশের স্বাক্ষর জালের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি একটি অপহরণ মামলা। আসামিরা ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল। পরে পাঁচ হাজার টাকায় মীমাংসা হয়েছে। এখন একটি মহল আকাশকে চাপ দিয়ে, ভয়ভীতি দেখিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছে। আমি কেমন মানুষ তা সবাই জানে। থানায় মামলা বাণিজ্যের কোনো সুযোগ নেই।’

এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্ত কমিটিও হয়েছে। তদন্তে ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর