বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পেনশনের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব: বাবার মরদেহ ২ দিন উঠানে

  •    
  • ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ২২:২৬

পেনশনের টাকা নিয়ে সন্তানদের দ্বন্দ্বে বাড়ির উঠানে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর দুই দিন পড়ে ছিল বাবার মরদেহ।

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পেনশনের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে মনির আহমেদ নামের এক ব্যক্তির মরদেহ দুই দিন বাড়ির উঠানে পড়ে ছিল। অবশেষে মৃত্যুর ৩৯ ঘণ্টা পর সোমবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে মরদেহ দাফন করা হয়।

উপজেলায় বড়উঠান ইউনিয়নের কেরানিবাপের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল সিএসসিআরে মারা যান তিনি।

মনির আহমেদ ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন। তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে কাজ করতেন। এক বছর আগে তার কর্মজীবন শেষ হয়।

বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, ‘মনিরুল চাকরি জীবন থেকে অবসরের পর পেনশন বাবদ ৮০ লাখ টাকার মতো পান। এর মধ্যে কিছু টাকা বিভিন্ন কাজে খরচ করেছেন, বাকি টাকা এফডিআর করে রেখে দিয়েছিলেন। তার তিন মেয়ে ও দুই ছেলে। দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে সৌদিপ্রবাসী।

মাস দুই আগে তার ক্যানসার ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন তার অবস্থা গুরুতর, চিকিৎসায় কোনো কাজ হবে না, এক মাসের মতো বাঁচতে পারেন তিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকের কথা শুনে তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে চান স্ত্রী ও ছেলে জাহাঙ্গীর। কিন্তু মনির আহমেদ ও তার মেয়েরা শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।

চিকিৎসার কাজে তার মেয়েরা এফডিআর ভেঙে কিছু টাকা নিয়েছিলেন। তাকে ভারত নিয়ে যাওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু শনিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।’

চেয়ারম্যান বলেন, ‘মৃত্যুর পর মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে এফডিআরের টাকার হিসাব চান ছেলে জাহাঙ্গীর। টাকার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত মরদেহ দাফনে আপত্তি জানান তিনি। এর মধ্যে মনির আহমেদের তিন মেয়েকে অবরুদ্ধ করেন জাহাঙ্গীর। বড় মেয়ে কৌশলে পালিয়ে গেলেও বাকি দুজনকে আটকে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে।

এ অবস্থায় খবর পেয়ে আমি ইউপি সদস্যকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। পেনশনের টাকার সুষ্ঠু বণ্টনের আশ্বাসে মরদেহ সোমবার সকালে দাফন করা হয়। দুই মেয়েকে উদ্ধার করে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বজনদের মধ্যে কেউ অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া দিতে রাজি না হওয়ায় আমি সাড়ে ১৭ হাজার টাকা ভাড়াও দিয়ে দিয়েছি।’

মনির আহমেদের স্ত্রী দিলুয়ারা বেগম বলেন, ‘থেরাপি দেয়ার কথা বলে হাসপাতাল থেকে বের করে ব্যাংকে নিয়ে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে নেয় বড় মেয়ে। বাবার মৃত্যুর পর ছেলে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড় মেয়ে স্বীকার করেনি। পরে মেয়েরা লাশ রেখে পালিয়ে গেছে।’

মনির আহমেদের এফডিআর ছিল এবি ব্যাংকের চাতরী চৌমুহনী শাখায়।

ব্যাংকটির চাতরী চৌমুহনী শাখার ব্যবস্থাপক ফারহান জামান বলেন, ‘সম্প্রতি তিনি (মনির আহমেদ) স্বজনদের নিয়ে এসে এফডিআর ভাঙান। সেখান থেকে একটা বড় অ্যামাউন্টের টাকা আরেকটি অ্যাকাউন্টে পাঠান। তিনি ওই টাকা ভারতে গিয়ে চিকিৎসার জন্য ট্রান্সফার করেছিলেন। তাছাড়া বৈধ উপায়ে আরো কয়েক দফায় টাকা উত্তোলন করা হয়েছিল।’

এ বিভাগের আরো খবর