বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাংবাদিক জিম্মি-মারধরের অভিযোগে মামলা

  •    
  • ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ২১:৫৭

সাংবাদিক আবু আজাদ বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে সকালে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কের মঘাছড়িতে পৌঁছাই। সড়কের পাশে মাটি তুলে নামহীন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই ছবি তুলতে গেলে ইউপি সদস্য মোহন ৫ থেকে ৬ জন লোক নিয়ে এসে আমাকে মারধর করে।’

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ইটভাটায় পেশাগত দায়িত্ব পালনে গিয়ে জিম্মি ও মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন সংবাদকর্মী আবু আজাদ। মামলায় আসামি করা হয়েছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ ৪ জনকে।

রাঙ্গুনিয়া থানায় সোমবার বিকেলে করা এই মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫ থেকে ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব মিলকী।

আসামিরা হলেন ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মহিউদ্দিন তালুকদার মোহন, চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী, ইটভাটার ম্যানেজার মো. কামরান এবং মোহনের সহযোগী কাঞ্চন তুড়ির।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে সোমবার পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়। একই দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) নেতারা।

যা ঘটেছিল

উপজেলার মঘাছড়ি এলাকায় রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের স্টাফ রিপোর্টার আবু আজাদ।

ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিক আবু আজাদ বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহ করতে সকালে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কের মঘাছড়িতে পৌঁছাই। সড়কের পাশে মাটি তুলে নামহীন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই ছবি তুলতে গেলে ইউপি সদস্য মোহন ৫ থেকে ৬ জন লোক নিয়ে এসে আমাকে মরধর করে।

‘এ সময় মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জিম্মি করে জোরপূর্বক একটি নোহা গাড়িতে তুলে মঘাছড়ি বাজারে নিয়ে যায়। সেখানেও প্রকাশ্যে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে আবার মারধর করে। এরপর তার কার্যালয়ে নিয়ে বেঁধে রেখে আমার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও আইডি কার্ড কেড়ে নেয়। এ সময় আমার বিকাশ অ্যাকাউন্টে যা টাকা ছিল সব তুলে নিয়ে আরও ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এতে আমি অফিসের নম্বর দিয়ে তাদের যোগাযোগ করতে বলি।’

আজাদ আরও বলেন, “মারধরের একপর্যায়ে মোহনের মোবাইলে চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আমার সঙ্গে কথা বলেন। পরিচয় জানার পর তিনি বলেন, ‘এ রকম সাংবাদিক মেরে ফেললে কিছু হবে না।’ তার নির্দেশে আমার মোবাইলে গুগল ড্রাইভে ঢুকে সব ছবি-ভিডিও মুছে দিয়ে মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলে ইউপি সদস্য মোহন।”

পরে চেয়ারম্যানের নির্দেশে ছেড়ে দেয়া হলে রাঙ্গামাটি হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন বলে জানান আজাদ।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন তালুকদার মোহন বলেন, ‘চেয়ারম্যানের নির্দেশে ওই সাংবাদিককে আনতে যাই। গিয়ে দেখি চেয়ারম্যানের লোকজন তাকে মারধর করছে। তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেছে।

‘তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে আমার অফিসে নিয়ে আসতে চাইলে, সে রাজি হয়নি। পরে তাকে জোর করে গাড়িতে তুলে আমার অফিসে আনি। তার মানিব্যাগ, এটিএম কার্ড, আইডি কার্ড আমার কাছে আছে। মোবাইলটা যেহেতু ভেঙে ফেলেছে, চেয়ারম্যানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কিনে দেব।’

ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘মোহন আমাকে ফোন করে বলেছে, একজন ইটভাটার ছবি তুলছে। আমি মোহনের মোবাইল ফোন দিয়ে ওই সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে তাকে গাড়িতে তুলে দিতে বলেছি। আমি সেখানে ছিলাম না।’

এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গনি ওসমানী বলেন, ‘আমরা ঘটনার বিষয়টি শুনেছি। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। যদি মারধর ও সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগ সত্যি হয়, তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে উচ্চ আদালতে ইটভাটা মালিকদের মামলা চলমান, তাই আমরা চাইলেই ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছি না।’

রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কী বলেন, ‘সাংবাদিক মারধরের বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

এ বিভাগের আরো খবর