১৯৭৫ সালের পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে এ দেশের মানুষকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে দেশকে আলোর পথ দেখিয়েছে। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
সোমবার দলটির সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকের শুরুতে এসব কথা বলেন তিনি। গণভবনে তার সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই আওয়ামী লীগকে অনেক ঝড়-ঝঞ্ঝার মোকাবিলা করতে হয়েছে। যখন যারা ক্ষমতায় এসেছে তাদের একটাই লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগ ধ্বংস করা, আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেয়া। আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া সবাই।
অথচ এ দেশ ও জাতির যা কিছু অর্জন, তার সবই আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে। এ দেশের মানুষকে আওয়ামী লীগই দিয়েছে। ভাষা আন্দোলন, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস, সাত মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতা, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা, যুক্তফ্রন্ট সরকার থাকতে এ দেশে যা কিছু হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মন্ত্রী হিসেবে তা করে দিয়েছেন।’
সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সভা হয়। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ এক কদমও এগোতে পারেনি। মানুষের খাবার ছিল না, পরনে কাপড় ছিল না, হরিলুট করে খেয়েছে সব। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে, জয় বাংলা স্লোগান এক রকম নিষিদ্ধ ছিল। এসব অমূল্য সম্পদ থেকে এ দেশের মানুষকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। আলোর পথ দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ।
আমরা ক্ষমতায় আসার পর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি, সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিতে কাজ করছি। সার্বিকভাবে অন্ন-বস্ত্র, শিক্ষা-চিকিৎসাসহ মৌলিক চাহিদাগুলো নিশ্চিত করেছি।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমাদের সংগঠনটাই আমাদের বড় শক্তি, এটা মাথায় রাখতে হবে। সংগঠন যদি শক্তিশালী থাকে আর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস যদি অর্জন করতে পারে, তাহলে সরকার চালানো এবং দেশের উন্নয়ন করা কঠিন কাজ হয় না। এটা হল বাস্তবতা।
সে বাস্তবতা নিয়েই আমরা কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।’
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, ‘আওয়ামী লীগ যথাযথভাবে গঠনতন্ত্র মেনে চলে। সেজন্যই যথাসময়ে সম্মেলন করা হয়েছে। আমাদের সংগঠন গণমানুষের দল। সবসময় মানুষের পাশে থাকে। দৈবদূর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যের কথা পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইনশাল্লাহ, আমাদের যে লক্ষ্য ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ- সেটা কীভাবে করব, কী কী ক্ষেত্রে করবো, সেটা আমি আগেও বলেছি।... অর্থাৎ আমাদের পুরো জনগোষ্ঠী হবে স্মার্ট জনগোষ্ঠী, সেটাই আমরা করতে চাই।’ বাংলাদেশ সবসময় এগিয়ে থাকবে সে আশাবাদও ব্যক্ত করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ বিশ্ব বাংলাদেশকে সম্মানের সঙ্গে দেখে, যেখানেই যাই মর্যাদার চোখে দেখে। এসব আওয়ামী লীগের কারণেই হয়েছে। আমরা দেশের উন্নয়ন করেছি বলেই হয়েছে।
দল ক্ষমতায় আছে বলেই মানুষ বিনা পয়সায় করোনা ভ্যাকসিন পেয়েছে, টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে, চিকিৎসা পেয়েছে। অন্য কেউ সরকারে থাকলে রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। উন্নয়নশীল দেশ হয়েছি। উন্নত হতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হবে। অর্জনগুলো ধরে থাকতে হবে।’
সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ উপস্থিত ছিলেন নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর ১৭ সদস্য। সভায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা দলের কার্যনির্বাহী সদস্যদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা রয়েছে।