পঞ্চগড়ে মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশ এবং বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচটি পৃথক মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় মোট ৮১ জনের নাম উল্লেখসহ এক হাজারেরও বেশি অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সরকারি কাজে বাধা দান, পুলিশের ওপর বল প্রয়োগ, ককটেল বিস্ফোরণ, সড়ক অবরোধ এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে পঞ্চগড় সদর থানায় করা এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস.এম সিরাজুল হুদা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার পর জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছেন।
পুলিশ সুপার এস.এম সিরাজুল হুদা বলেন, ‘শনিবার বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত মিছিলের কর্মসূচি ছিল। আমরা বিএনপির লোকজনকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে অনুরোধ করি। আমরা নিরাপত্তার কারণে ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করি।
কিন্তু তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি না করে লাঠি, ইটপাটকেল নিয়ে মিছিল করে এবং পুলিশের নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে কোনো কারণ ছাড়াই তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।’
এর আগে, শনিবার দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে মিছিলের প্রস্তুতি নেয় পঞ্চগড় জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকে সেখানে। পরে মিছিল বের করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় মিছিলে আসা আব্দুর রশিদ আরেফিন (৫১) নামে একজন প্রাণ হারান বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বিএনপির এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার এস. এম সিরাজুল হুদা বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশের মারপিটে কোনো প্রাণহানি হয়নি। আব্দুর রশিদ আরেফিন হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন। দুপুর আড়াইটার দিকে পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে আনা হয়।আব্দুর রশিদ আরেফিনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বিকেল ৫টায় তার নিজ এলাকা ময়দানদীঘিতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।’