মঙ্গলবার রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শেষ মুহূর্তে চলছে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনসহ (ইভিএম) ভোটের উপকরণ পৌঁছানোর কাজ।
রংপুর পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ থেকে সোমবার বেলা ১১টার দিকে এসব উপকরণ ২২৯টি কেন্দ্রে পাঠানো শুরু হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন আনুষ্ঠানিকভাবে এসব পাঠানোর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশন নূরে আলম মিনা, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরীসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে উপকরণ বিতরণ কেন্দ্র ঘুরে দেখেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন।
বিতরণ কেন্দ্র থেকে নির্বাচনি কর্মকর্তাদের কাছে ভোটের উপকরণ বুঝিয়ে দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সেসব উপকরণ পুলিশি প্রহরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নির্ধারিত কেন্দ্রে।
এ সময় কথা বলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন। বলেন, ‘আমরা আশা করছি দুপুরের পরেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে এসব উপকরণ। সেখানে যাওয়া মালামালগুলো আমরা আবারও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। আমরা সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করব, যাতে আগামীকাল সকাল ৮টার মধ্যে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম শুরু করতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইভিএমের কারিগরি ত্রুটির কারণে ভোটগ্রহণে যেন কোন অসুবিধা না হয় সেই কারণে আমাদের বাড়তি ইভিএম আছে। যদি কোনো সমস্যা হয়, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তা রিপ্লেস করতে পারব।’
আবদুল বাতেন বলেন, ‘যারা ভোটগ্রহণ করবেন তাদের আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি, আমরা বলে দিয়েছি তারা যেন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দায়িত্বপালন করেন। কোন অনিয়ম হলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা নগরবাসীকে এবং ভোটারদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই। আগামীকাল তারা একেবারেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন এবং কেন্দ্রে গিয়ে তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।’
নিরাপত্তা ইস্যুতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে প্রচুর সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর সদস্য পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
সাধারণ কেন্দ্রে চারজন পুলিশ সদস্য এবং আনছারসহ ১৫ সদস্য থাকবেন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জন সদস্য থাকবে। নারী ভোট কেন্দ্রে নারী পুলিশ সদস্য ছাড়াও আনসার সদস্য থাকবেন। কেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
তিনি বলেন, ‘ভোটার এবং অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া ওখানে কেউ যেতে পারবেন না। ৩৩টি ওয়ার্ডে ৩৩টি মোবাইল টিম, ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রটের নেতৃত্বে ৩৩টি অতিরিক্ত মোবাইল টিম (ভ্রাম্যমাণ আদালত) কাজ করবে ১১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রিটের অধীনে ১১টি স্টাইকিং ফোর্স থাকছে বিজিবির। এ ছাড়াও র্যাবের ১৭টি টিম মাঠে থাকবে। আমি মনে করি একটি চমৎকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এ বছর মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ প্রার্থী। তবে ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলনের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন নগরবাসী। অন্যপ্রার্থীদের নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই ভোটের মাঠে।
নির্বাচনে ২২৯টি কেন্দ্রে ২২৯ প্রিজাইডিং অফিসারের পাশাপাশি ১১ সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, এক হাজার ৩৪৯ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, দুই হাজার ৬৯৮ পোলিং অফিসার হিসেবে মোট চার হাজার ২৭৬ জনকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
এবার দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ পুরুষ এবং দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ নারী ভোটার ২২৯টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।