বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাকায় পিটার হাস প্রত্যাশিত কর্মফল পেয়েছেন: মস্কো

  •    
  • ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৭:২০

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস অযাচিতভাবে প্রবেশ করেছেন জানিয়ে মস্কো বলছে, ‘এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ হস্তক্ষেপের শামিল।’

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত তার প্রত্যাশিত কর্মফল পেয়েছেন- মস্কোর এমন মন্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বিতর্কের উত্তাপ এবার ঢাকা থেকে মস্কো ও ওয়াশিংটনে ছড়ানোর শঙ্কা জেগেছে।

১৪ ডিসেম্বর ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস যে বিতর্ক শুরু করেছিলেন, তাতে এরই মধ্যে যোগ দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যান। ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া দূতাবাসের পর এবার এতে যুক্ত হলেন মস্কোর পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস অযাচিতভাবে প্রবেশ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ হস্তক্ষেপের শামিল।’

গত বৃহস্পতিবার মস্কোয় নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মারিয়া জাখারোভা মস্কোর এই মনোভাবের কথা তুলে ধরেন। রোববার ঢাকার রুশ দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেজে টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত মারিয়া জাখারোভার বিবৃতির লিঙ্কটি শেয়ার করে।

এর আগে মস্কোর দৃষ্টিতে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের কী ভূমিকা এবং ইউরোপে তার প্রভাব কেমন, তা তুলে ধরতে টুইটারে একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করেছে ঢাকায় রুশ দূতাবাস।

টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত বিবৃতিতে মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘আমরা ঢাকায় আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা ঘিরে ব্যাপকভাবে প্রচারিত ঘটনাটি লক্ষ করেছি। তিনি (পিটার হাস) ২০১৩ সালে নিখোঁজ বিরোধী দলের এক নেতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি সংগঠনের লোকজনের কারণে তার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। সংগঠনটির লোকজন রাষ্ট্রদূতের সেখানে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন না।

‘ঘটনাটি আমেরিকান কূটনীতিকের (পিটার হাস) তৎপরতার প্রত্যাশিত ফল। যিনি বাংলাদেশের নাগরিকদের মানবাধিকার সুরক্ষার নামে ক্রমাগত দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য ও জার্মান কূটনৈতিকরাও ঢাকায় একই লক্ষ্যে যুক্ত থেকে আগামী সংসদ নির্বাচনের স্বচ্ছতা, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার বিষয়ে খোলামেলাভাবে বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।’

মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার মৌলিক নীতি লঙ্ঘন করে, এমন পদক্ষেপগুলো মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

‘কেউ যদি জানতে চান, কূটনীতিক, দায়মুক্তি, দূতাবাস, নিরাপত্তা-শব্দগুলো কেমন হবে? আমরা সব সময় আন্তর্জাতিক আইন, কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পর্কে ভিয়েনা সনদ অনুযায়ী এই বিষয়গুলো অনুসরণের আহ্বান জানাই। এটাই যে মূলনীতি, সেটাই সত্য। আমরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশগুলোকে শুধু তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই যত্নবান ও মন্তব্য করার জন্য বলব না, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বিভিন্ন দেশ ও তাদের প্রতিনিধিরা যখন তাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে, তখন তাদের সহকর্মীদের সমর্থন করার আহ্বান জানাই।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দূতাবাস, কনস্যুলেট জেনারেল, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা করা হচ্ছে বা তারা হুমকি পাচ্ছে, এটা যুক্তরাষ্ট্র দেখতে বা শুনতে চায় না। এতে যেন তাদের কিছু আসে যায় না।

‘বড় জোর তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নীরব থাকে। আর সবচেয়ে খারাপ হলো, তারা ঘটনাগুলোর (হুমকি বা হামলা) পক্ষে যুক্তি দাঁড় করায়। যখন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীরা সিরিয়ায় রুশ দূতাবাসের বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা চালিয়েছিল, তখন তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে আমেরিকানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু রুশ প্রস্তাবকে ওয়াশিংটন সমর্থন করেনি।’

প্রেক্ষাপট

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে। সেদিন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ৯ বছর আগে নিখোঁজ বিএনপির এক নেতার বাসায় যান। বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাকে পিটার হাসের বাংলাদেশে বিভাজনের রাজনীতিতে প্রবেশ হিসেবে দেখছেন।

এ সফরের সময় সেখানে পিটার হাসের কাছে স্মারকলিপি দিতে যান জিয়াউর রহমানের আমলে সশস্ত্র বাহিনীতে হত্যা ও নিখোঁজের শিকার পরিবারের সদস্যদের সংগঠন ‘মায়ের কান্না’র সদস্যরা। এতে পিটার হাস সেখানে তার অবস্থান সংক্ষিপ্ত করেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ঘটনার বিবরণ দিয়ে নিরাপত্তার শঙ্কার কথা জানান।

পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে তলব করে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট। জানানো হয় ঢাকায় পিটার হাসের নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও রাষ্ট্রদূত ঢাকার অবস্থান ও সেদিনকার ঘটনার ব্যাখ্যা দেন।

এদিকে গত মঙ্গলবার ঢাকার রুশ দূতাবাস তাদের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে জানায়, ‘রাশিয়া অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের মতো যে দেশগুলো বিদেশি শক্তির নেতৃত্ব অনুসরণ না করে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতি গ্রহণ করে, সে দেশগুলোর প্রতি রাশিয়া পুরোপুরি সমর্থন জানায়।’

রুশ দূতাবাসের এই বিবৃতি প্রকাশের পরদিন পাল্টা অবস্থান প্রকাশ করে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। এক টুইট বার্তায় দূতাবাস ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের প্রসঙ্গ টেনে আনে।

রাশিয়ার ওই বিবৃতি নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন শেয়ার করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের টুইট বার্তায় লেখা হয়, ‘ইউক্রেনের ক্ষেত্রে কি এই নীতি মানা হয়েছে?’

এ বিভাগের আরো খবর