বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কালোবাজারিতে ক্ষুব্ধ কক্সবাজারের পর্যটকরা

  •    
  • ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ২৩:১৫

জামাল খান লালু নামে এক কালোবাজারির সিন্ডিকেটের নাম লালুচক্র। তার কাছে হোটেল রুম চাওয়া হলে জানান, কোথাও রুম নেই; কিন্তু তিনি সি-ওয়ার্ল্ড রিসোর্টে রুম নিয়ে দিতে পারবেন। প্রতি রুমের ভাড়া সাড়ে ৩ হাজার করে দিতে হবে।

টানা তিন দিনের ছুটিতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত নগরী কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নেমেছে। সৈকত উপভোগ করলেও হোটেল পাওয়া নিয়ে কালোবাজারিতে ক্ষোভ জানিয়েছেন পর্যটকরা। অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

শুক্রবার ভোর থেকেই সৈকতে দেখা গেছে পর্যটকদের ভিড়। অলিগলির হোটেল-মোটেলে রুম পেতে অপেক্ষায় দেখা গেছে অনেককে।

কলাতলী-মেরিন ড্রাইভ হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ‘টানা ৩ দিনের ছুটিতে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পর্যটক এসেছে। সব কটি হোটেলে রুম বুকিং হয়ে গেছে। এ চাপ আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত থাকবে।’

বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরের (টুয়াক) সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, ‘৩ দিনের ছুটিতে আমাদের সব হোটেল বুকিং হয়ে গেছে। অনেক পর্যটক অনলাইনে রুম চাইলেও তাদের দিতে পারছি না। আশা করি, এই ৩ দিনে সাড়ে ৩ লাখ পর্যটক সমাগম হবে।’

সপরিবারে বেড়াতে আসা পর্যটক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে ইউএস বাংলার বিমানে কক্সবাজারে আসছি। তবে হোটেল বুকিং দেইনি। এখানে এসে রুম না পেয়ে বিপাকে আছি। একেকজন একেক ধরনের তথ্য দিচ্ছে।

‘কালোবাজারির কবলে পড়লে বিপদ। প্রথম দুজনকে তাই মনে হয়েছে। রুম দেয়ার কথা বলে শহর ঘুরিয়েছেন। তবে যে কয়েকটি রুম পেয়েছি সেগুলোর কোয়ালিটি ভালো না, আবার দামও বেশি।’

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের মুখপাত্র এইচ এম নজরুল ইসলাম জানান, ছুটির সময়ের অন্তত ৭ দিন আগ থেকে কক্সবাজারে কালোবাজারিরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা বিভিন্ন হোটেলের রুম বুক করে রাখে। এতে সময়মতো পর্যটকরা রুম পায় না। এভাবে সংকট সৃষ্টি করে পর্যটকদের কাছে সেগুলো অতিরিক্ত দামে ভাড়া দেয়।

তিনি বলেন, ‘দেড় হাজার টাকা হয়ে যাচ্ছে সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজারে। আর একেবারে নরমাল রুমের ভাড়াও হয়ে যায় ২ থেকে আড়াই হাজার। এভাবে অব্যবস্থাপনা হলে কঠিন সংকটে পড়বে পর্যটন নগরী। এ কথা কেউ ভাবতে চায় না।’

পর্যটক পরিচয় এক কালোবাজারির সঙ্গে আলাপ করেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক। তিনি ও তার দলের লোকজন কলাতলীর হোটেল-মোটেল ঘিরে কাজ করেন। পর্যটকরা কক্সবাজার পৌঁছে কলাতলীতেই সাধারণত হোটেলের খোঁজে আসেন।'

জামাল খান লালু নামে ওই কালোবাজারির সিন্ডিকেটের নাম লালুচক্র। তার কাছে হোটেল রুম চাওয়া হলে জানান, কোথাও রুম নেই; কিন্তু তিনি সি-ওয়ার্ল্ড রিসোর্টে রুম নিয়ে দিতে পারবেন। প্রতি রুমের ভাড়া সাড়ে ৩ হাজার করে দিতে হবে।

এত বেশি ভাড়া কেন জানতে চাইলে লালুর দাবি, মাত্র কদিন ব্যবসা করবেন। সব সময় তো এত মানুষ আসবে না।

সি-ওয়ার্ল্ড রিসোর্টের পরিচালক মেহেদি হাসান বলেন, ‘আমাদের সর্বোচ্চ রুম ভাড়া দেড় থেকে ২ হাজারের মধ্যে। রুম এখন কোনোটাই খালি নেই।’

কালোবাজারির বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘সব কটি হোটেলকে নির্দেশনা দেয়া আছে। কোনো ধরনের পর্যটক ভোগান্তি মেনে নেয়া হবে না। অভিযোগ পেলেই সর্বোচ্চ ব্যবস্থা।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) চৌধুরী মিজানুজ্জামান বলেন, ‘কক্সবাজার জেলায় যত পর্যটক স্পট রয়েছে, সেখানে ৩ দিনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

‘পর্যটকদের যেন কোনো ধরনের হয়রানি না হয়, সে জন্য হেল্পডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে সাদা পোশাকধারী পুলিশও রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর