বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাড়িওয়ালা মোস্তফার ভাড়ায় লাফ, পরের টাকায় ভোট

  •    
  • ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৪:৪৬

রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকাকালে জাতীয় পার্টির নেতা মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সম্পদে খুব একটা হেরফের হয়নি। তবে আগেরবার তিনি বছরে বাড়িভাড়া দেখিয়েছেন ৭১ হাজার টাকা। সেটি বেড়ে এবার হয়েছে সাড়ে ২০ লাখ টাকা। ভোটের আগে এবার তিনি অনুদান পেয়েছেন সাড়ে ১০ লাখ টাকা।

পাঁচ বছর রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকার পর নতুন করে ভোটের লড়াইয়ে নামার আগে নির্বাচন কমিশনে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা তার সম্পদের যে হিসাব দেখিয়েছেন, তাতে তার নগদ টাকার হেরফের না হলেও বেড়েছে স্থাবর সম্পত্তি। পরিশোধ হয়েছে ১৫ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণও।

তবে ভোটের আগে স্বজন ও পরিচিতদের কাছ থেকে আবার অনুদান নিয়েছেন তিনি। অন্য মানুষ কেন তাকে টাকা দেবে, এই প্রশ্নে বলেছেন, এটা কোনো অপরাধ নয়।

আগামী ২৭ ডিসেম্বরের ভোটকে সামনে রেখে টানা দ্বিতীয় জয়ের আশায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা এখন প্রচারে। আর নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র দেয়ার সময় আয়-ব্যয় ও সম্পদের হিসাবও দিয়েছেন। ২০১৭ এবং এবারের সম্পদের এই হিসাব তুলনা করে পাওয়া গেছে বেশ কিছু তথ্য।

বাড়িভাড়ায় বিপুল ব্যবধান২০১৭ সালের নির্বাচনের আগে হলফনামায় মোস্তফার বার্ষিক আয় দেখানো হয় ৩ লাখ ৬৪ হাজার ২৭২ টাকা। এর মধ্যে বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে দেখানো হয় ৭২ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে দেখানো হয় দুই লাখ ৯২ হাজার ২৭২ টাকা।

বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে আয়ে দিয়েছে লাফ। এবার হয়েছে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

বাড়িভাড়া ২৮ গুণ বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির এই প্রার্থী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিভিএস সেন্টার এবং ব্যাংক ভবন ভাড়ার অ্যাডভান্স হিসেবে ৩০ লাখ টাকা পেয়েছি। সেখান থেকে প্রতি মাসে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা ভাড়া পাই। তা ছাড়া ছাত্রাবাস থেকেও ভাড়া পাই। সেই টাকা এসব। অন্য কোনো টাকা নেই।

শহরের শাপলা ও মডার্ন মোড় এলাকায় একতলা দুটি ছোট আকারের ভবন আছেন মোস্তফার। ২০১৮ সালে সংস্কার করে একটি মোটরসাইকেল কোম্পানি টিভিএসের শোরুম হিসেবে এবং একটি ব্যাংককে ভাড়া দেয়া হয়েছে।’

হাতে নগদ একই, বেড়েছে ব্যাংকে জমামোস্তফার গত পাঁচ বছরে নগদ টাকার পরিমাণ বাড়েনি এক টাকাও। গতবারের মতোই এবারও হাত নগদ দেখিয়েছেন সাড়ে সাত লাখ টাকা।

তবে ব্যাংকে জমা বেড়েছে। ২০১৭ সালে ব্যাংকে জমা দেখানো হয় ১ লাখ ৫০ হাজার, স্ত্রীর নামে ছিল আরও ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এবার ব্যাংক জমা বেড়ে হয়েছে ১৬ লাখ ৭৭ হাজার ২৯৪ টাকা, স্ত্রীর নামে ২ লাখ ২০ হাজার ৫০০ টাকা।

স্ত্রীর হাতে নগদ ২০১৭ সালে ছিল ২০ হাজার টাকা, এবার দেখানো হয় ৯০ হাজার।

পাঁচ বছরে স্ত্রীর স্বর্ণ ১০ ভরি থেকে বেড়ে এবার হয়েছে ১৫ ভরি।

২০১৭ সালে নিজ নামে ১৬ শতক ও স্ত্রীর নামে ৬ শতক জমি দেখানো হয়। জনতা ব্যাংকে ঋণ দেখানো হয় ১৫ লাখ টাকা।

এবার স্ত্রীর নামে ৪ শতক জমি ও একটি বাড়ি দেখিয়েছেন মোস্তফা। পাশাপাশি পরিশোধ করেছেন ১৫ লাখ টাকার ব্যাংকঋণ।

এবার বন্ডে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ, এ ছাড়া দুই লাখ টাকার ইলেকট্রনিক পণ্য, তিন লাখ ২০ হাজার টাকার আববাবপত্র, আগেরবারের মতোই নিজের নামে মোটরসাইকেল দেখিয়েছেন মোস্তফা।

ভোটের আগে বড় অঙ্কের অনুদান মোস্তফার হলফনামায় ভাই আতাউর রহমানের কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ, খামারপাড়া নিবাসী সাদেকুর রহমান লিদুর কাছ থেকে পৌনে চার লাখ টাকা এবং আওলাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে আরও ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা দান হিসেবে গ্রহণের কথা জানানো হয়েছে।

সব মিলিয়ে ভোটের প্রচারে সব মিলিয়ে সাড়ে ১০ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী।

অন্যের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নিউজবাংলাকে জাপা প্রার্থী বলেন, ‘ভোটের সময় টাকা লাগে। আত্মীয় স্বজনের কাছে টাকা নিতে হয়। খরচ বাবদ আমার স্বজনরা টাকা ধার দিয়েছে, কেউ এককালীন দিয়েছে। এটা তো অপরাধ না।’ তিনি বলেন, ‘আমি ওয়ার্কে বের হলে মানুষ খাওয়ায়, টাকাও দেয়। সেদিন এক ওয়ার্কে একজন পাঁচশত টাকা দিয়েছে, এটা ভালোবাসা। মানুষ ভালো বাসে তাই কাজও করে।’

অন্য প্রার্থীদের হলফনামাআওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া হলফনামায় জানিয়েছেন, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক (এলএলবি)। পেশায় আইনজীবী।

নিজ নামে নগদই আছে ৪৪ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৯২৪ টাকা।২০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার, ১ লাখ ১০ হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের খাট, আলমারি রয়েছে।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৩০ শতক কৃষিজমি, ৩ শতক এবং ৩ কাঠা অকৃষি জমি, ৩ শতক জমিসহ ৪ তলা আবাসিক বাড়ি রয়েছে। কৃষি খাত থেকে বছরে ৪২ হাজার টাকা, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে ১ লাখ ৩ হাজার ৫০০ টাকা, আইন পেশা থেকে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে ৯৫ হাজার ৪০ টাকা, ব্যাংক সুদ থেকে ৯ হাজার ৫৫৭ টাকা আয় রয়েছে তার।

জাসদ নেতা শফিয়ার রহমান পেশায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি এম কম পাস। অতীত ও বর্তমানে তার নামে মামলা নেই, ছিল না। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে নগদ ৩৬ লাখ ২০ হাজার ৪৮২ টাকা, ব্যাংকে ১৫ লাখ ৬৩ হাজার ৬৮৫ টাকা।

শেয়ার আছে ৭১ লাখ ১১ হাজার ১৭১ টাকার, বিনিয়োগ আছে আরও ৩৫ লাখ টাকা।

তার স্বর্ণালংকার ১০ তোলা, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আছে ৬০ হাজার আর আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকার।

স্ত্রীর নামে শেয়ারে বিনিয়োগ ছার লাখ ১৫ হাজার ৮৪৬ টাকার, সঞ্চয়পত্র বাবদ ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার ২৬ তোলা।

ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আছেদ দেড় লাখ ও আসবাবপত্র এক লাখ টাকার। অন্যান্য আছে ৩০ লাখ ৪৭ হাজার ১২২ টাকা।

নিজ নামে কৃষিজমি আছে ২৭.৩ বিঘা, অকৃষি জমি আছে ০.৬৭৫ একর, বাড়ি দুটি।

স্ত্রীর নামে জমি আছে ১.১১ একর, অকৃষি জমি আছে ০.০৩ একর।

তার আয়ের উৎস কৃষিতে ২ লাখ ২৫ হাজার, ব্যবসায় ৪ লাখ ৩০ হাজার, শেয়ার থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৮ টাকা, পেশা থেকে ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯২ টাকা, অন্যান্য ৫২ লাখ ২২ হাজার এক টাকা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা লতিফুর রহমান মিলনের নগদ আছে ২৫ লাখ ৯১ হাজার ৩৭৮ টাকা, ব্যাংকে আছে ৩ লাখ ৯০৬ টাক।

ইলেকট্রনিক ও আসবাবপত্র আছে ২ লাখ টাকার।

স্ত্রীর স্বর্ণালংকার বাবদ আছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

কৃষি থেকে বছরে ৩ লাখ ৪০ হাজার, ব্যবসা থেকে ৪ লাখ ৪০ হাজার, মূলধনী লাভ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

হলফনামার তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে কম নগদ টাকা জাকের পার্টির প্রার্থী খোরশেদ আলমের। তিনি দেখিয়েছেন নগদ ১ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ৩০ হাজার টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর