আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে পরিপূর্ণ মনে করেন না। তিনি ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নন; দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কিছু ব্যর্থতাও আছে।
শনিবার আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে আগের দিন ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন দাবি করেন।
২০১৬ সালে দলের জাতীয় সম্মেলনে প্রথমবারের মতো সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। তিন বছর পরের সম্মেলনেও তাকেই বেছে নেয় দল। এবার তিনি টানা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হবেন নাকি নতুন কেউ আসে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে জিজ্ঞাসা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আই অ্যাম নট আ পারফেক্ট লিডার। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের ভুলত্রুটি হতে পারে। বড় দলে সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতাও কিছু থাকবে।’
দলের ভেতরে শৃঙ্খলার অভাব নিয়ে এক প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রুলিং পার্টি, একাধারে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় কিছু সমস্যা থাকে। যেমন: যিনি নেতৃত্বে আছেন, তিনি থাকতে চান আবার নতুন কেউ পদে আসার আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে। দুই মিলে অনেক সময় দ্বন্দ্ব তৈরি হয়ে যায়। কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা হয়।’
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমাত্র আওয়ামী লীগই অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চা করে বলেও দাবি করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সম্মেলনে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়। বাংলাদেশ একমাত্র আওয়ামী লীগই নিয়মিত সম্মেলনের আয়োজন করে।’
দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করার সময় সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘ব্যর্থতা থেকে শিক্ষাও নেব। যেখানে ভুল আছে আমরা সম্মিলিতভাবে আগামীতে চেষ্টাও করব। কে কোন দায়িত্বে, সেটা ব্যাপার না। দায়িত্ব বদলালেও তো আমরা এই দলেই আছি।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হবে এ সম্মেলন, যেটি উদ্বোধন করবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। মঞ্চে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা বসবেন।
বিকেল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হবে দ্বিতীয় অধিবেশন। সেখানেই হবে নেতা নির্বাচন।
পরের নির্বাচনে জনগণের ম্যানডেট নিয়ে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আওয়ামী লীগ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে চায় বলেও জানান কাদের। তিনি বলেন, ‘তরুণরা স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন ডাকা গণমিছিল কর্মসূচি পিছিয়ে দেয়া নিয়েও কথা বলেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘তাদের শুভবোধের উদয় হয়েছে। কর্মসূচি পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নিয়েছে, তবে তারা তাদের কর্মসূচি থেকে সরে গেছে মনে করার কারণ নেই।’
বিএনপি আওয়ামী লীগকে হিংসা করে বলেও মনে করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘শত সেতু, শত সড়ক উদ্বোধন হয়েছে। মেট্রোরেল, টানেল আসছে। আমাদের রূপপুর, পায়রা এগুলো তাদের মনের জ্বালা বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট।’দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, আবদুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।