খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘আমরা ভারতের দালাল নই, ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু রাষ্ট্র। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বহুমাত্রিক অবদানের কথা অনন্য ইতিহাসের অংশ।’
বৃহস্পতিবার রাজশাহীর একটি হোটেলে ‘ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সেলিব্রেশন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহীতে ভারতের সহকারী হাইকমিশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা আমাদের ভারতের দালাল বলে আখ্যায়িত করে অপপ্রচার করে, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা অপপ্রচারটা বন্ধ করেন।
‘প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব করবেন না, সাত সমুদ্র-তেরো নদীর ওপারে বন্ধুত্ব করবেন, এটা কিন্তু হতে পারে না। বন্ধুত্ব সবার জন্যই থাকবে। কিন্তু অকৃত্রিম বন্ধুত্ব প্রতিবেশীরাই করে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আপনার বাড়িতে আগুন লাগলে পাশের বাড়িরই তো আগুন নেভানোর জন্য এক বালতি জল নিয়ে এগিয়ে আসে প্রথমে।’
মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের ভূমিকাও স্মরণ করেন সাধন চন্দ্র মজুমদার। বলেন, ‘প্রায় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়ে কখনও ওষুধ, কখনও খাদ্য কিংবা কখনও সেবার মাধ্যমে বুকভরা ভালোবাসা দিয়ে ভারতের মানুষ যে ঋণের জালে আবদ্ধ করেছে, সে ভালোবাসা কোনো দিন বাংলাদেশের মানুষ ভুলতে পারবে না। বন্ধুত্ব আর আস্থার জায়গা আরও শক্তিশালী করতে উভয় দেশই কাজ করছে।’
১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধীরা এখনও সে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
‘সে কারণে নতুন প্রজন্মকে প্রকৃত ইতিহাস জানাতে হবে। আর মুক্তিযোদ্ধারাই পারেন তাদের যুদ্ধকালীন স্মৃতিচারণার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুদেশের সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে, ভবিষ্যতে সম্পর্কের ভিত্তি আরও মজবুত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতা দূর করে জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ আরও বাড়ানো, সংস্কৃতির বিনিময় ও বাণিজ্য ভারসাম্য আনার আহ্বান জানান তিনি।
ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার বলেন, ‘প্রতিটি ভালো কাজে ভারত বাংলাদেশকে সঙ্গে রাখে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে থেকে স্বাধীনতা অর্জনে সাহায্য করেছে ভারতের জনগণ। দুই দেশের মানুষের ভাষা ও সংস্কৃতির মিল রয়েছে-যা দুই দেশের সম্পর্ককে করেছে মজবুত ও শক্তিশালী।’
অনুষ্ঠানে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, সমাজসেবক শাহীন আকতার রেণী, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলীও বক্তব্য রাখেন।
পরে সেখানে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।