ঢাকার সাভারে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছে তিতাস কর্তৃপক্ষ, তবে ওই নেতার অভিযোগ, তার গ্যাস সংযোগ বৈধ হওয়া সত্ত্বেও তিতাস কর্তৃপক্ষ মিথ্যা মামলা করেছে।
বুধবার রাতে আওয়ামী লীগ নেতা রাজু আহমেদসহ তিনজনের নামে মামলা করেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এক কর্মকর্তা।
মামলার বিষয়টি বৃহস্পতিবার দুপুরে নিশ্চিত করে সাভারে তিতাসের ব্যবস্থাপক (বিপণন) আবু সাদাত মো. সায়েম বলেন, ‘রাজু আহমেদের আবাসিক সংযোগ বৈধ ছিল, কিন্তু সেই সংযোগ থেকে অবৈধভাবে হোটেলে গ্যাস ব্যবহার করছিলেন তিনি।
‘এর আগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযোগ করে তার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও তিনি আবার অবৈধভাবে রেস্তোরাঁ চালাচ্ছিলেন।’
তিনি জানান, গতকাল অভিযান চালিয়ে রাইজার ও চুলা জব্দ করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এর আগেরবার অভিযান চালিয়ে যে জরিমানা করা হয়েছিল, সেই জরিমানার টাকা পরিশোধ করেননি রাজু আহমেদ।
অভিযুক্ত রাজু আহমেদ নিজেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য পরিচয় দেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন আশুলিয়ার চাঁনগাও এলাকার জাকির হোসেন ও গৌরিপুর এলাকার সিদ্দিকুর রহমান।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আমার গ্যাস সংযোগ লিগ্যাল আছে। তিতাস আগেরবারও আমাদের রাইজার নিয়ে গেছে। আমরা পরে তিতাসের সায়েম মোল্লার (ব্যবস্থাপক) বিরুদ্ধে মামলা করেছি। ব্যক্তিগত আক্রাশের কারণে এই কাজটা করেছেন তিনি।
‘দুই থেকে তিন মাস আগে সায়েমের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। মামলায় অভিযোগ ছিল, আমার লিগ্যাল গ্যাস, তবুও কেন তারা জরিমানা করবে ও রাইজার খুলে নিয়ে যাবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কালকে একটি জানাজায় ছিলাম। এর মধ্যেই আমার রেস্টুরেন্টে এসে এসব করে। তখন আমিসহ আমার কোনো লোকজনও ছিল না। হোটেলের খাবারদাবার সব লাথি দিয়ে ফেলে দেয়। ছয়-সাতটা সিলিন্ডার নিয়ে যায় তিতাসের লোকজন, যা ঠিক না।’
তিতাস গ্যাসের বিরুদ্ধে রাজুর মামলার বিষয়ে সায়েম বলেন, ‘গতবার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর তিনি তিতাসের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিলেন। সেখানে আমাকেও আসামি করা হয়েছিল।
‘মামলাটি ভিত্তিহীন। যেকোনো নাগরিক যে কারও বিষয়ে, যে কারও বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপপরিদর্শক (এসআই) আল মামুন কবির জানান, গ্যাস আইনে রাজু আহমেদকে প্রধান আসামি করে তিনজনের নামে মামলা করেছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। আসামিদের মধ্যে জাকিরকে আশুলিয়ার চাঁনগাও এলাকা থেকে বুধবার রাত সাতটার দিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।