সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুর ২০০ মিটার দক্ষিণে বালু ব্যবসায়ীরা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে তুলছে বালু। এ নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই তারা বালু তুলছে। তবে জেলা প্রশাসন তা অস্বীকার করে বলছে, অনুমতি দেয়নি তারা।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের ফুলবাড়ী ও চকবয়ড়া চর এলাকায় যমুনা সেতুর নিরাপত্তা বেষ্টনীজুড়ে ৮টি ড্রেজার বসিয়ে পাইপের মাধ্যমে সরাসরি ইকোনোমিক জোনে ফেলা হচ্ছে বালু।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ৪-এর (খ) অনুযায়ী, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।
তবে এ আইন অমান্য করেই তোলা হচ্ছে বালু।
এভাবে বালু উত্তেলনে যমুনা নদী তীরে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা।
আরিফ এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৮টি ড্রেজার বসিয়ে সেতুর প্রায় ২০০ মিটার দক্ষিণে যমুনা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সয়দাবাদ ইউনিয়নের অংশে দীর্ঘদিন বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। তবে স্থানীয় প্রভাবশালী ও জলদস্যুদের সহযোগিতায় যমুনা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে ফের দেদারছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অবৈধ বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে নদীতে ক্রমেই বাড়ছে অপরাধ। বালুমহাল থেকে উপার্জিত অর্থের একটি অংশ চলে যাচ্ছে জলদস্যুদের হাতে।
স্থানীয় মোশারফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গত মাসে এখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে প্রশাসন আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করে। এরপর সপ্তাহখানেক বালু তোলা বন্ধ ছিল। এখন আবার পুরোদমে বালু তোলা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তিনটি মহলের ইজারা দেয়া আছে। তবে বঙ্গবন্ধু সেতুর দক্ষিণে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে সেটার কোনো অনুমোদন নেই।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরিফ এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার আবু সায়েম সোহাগ বলেন, আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অনুমতি নিয়ে বালু উত্তোলন করছি।
এ বিষয়ে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল-১ (ইকোনমিক জোন) পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসকের অনুমতির মাধ্যমে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আপনারা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে জেনে নিন।
বঙ্গবন্ধু সেতুর ২শ মিটার দক্ষিণে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গনপুতি রায় বলেন, সদরে তিনটি বালু মহলের ইজারা দেয়া আছে। ইজারা ছাড়া বালু উত্তোলনের কোনো নিয়ম নেই। সেতুর কাছাকাছি ওই স্থানে আগেও দুই বার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে। ফের বালু উত্তোলন শুরু হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।