বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধারে সীমানা নির্ধারণ, দখলদারদের উচ্ছেদ ও বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করার পর চ্যানেলের প্রশস্ততা ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার সকালে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলে চলমান উচ্ছেদ, পরিষ্কার ও খনন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান।
মেয়র বলেন, ‘আদি বুড়িগঙ্গা ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে শুধু ভরাট হয়েছে। ময়লা-বর্জ্য দিয়ে এটা সয়লাব করা হয়েছে। এই প্রথম আমরা আদি বুড়িগঙ্গাকে পুনরুদ্ধারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কার্যক্রমটা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দুরূহ। চারপাশ দিয়ে দখল করে এটাকে সংকীর্ণ করা হয়েছে।
‘আজকে আপনারা লক্ষ করেছেন, যে পাশে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, সেটার মাঝামাঝি জায়গায় এখন সরু পানি প্রবাহের যে জায়গাটা দেখা যাচ্ছে, (কার্যক্রম শুরুর পূর্বে) নদীটা ততটুকু বিস্তৃত ছিল। কিন্তু এখন আমরা এটার প্রশস্ততা প্রায় ১০ গুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি এবং আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে।’
দখলদারদের নানাবিধ বাধা উপেক্ষা করেই বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে উল্লেখ করে তাপস বলেন, ‘এখানে অনেক বাধা ছিল। অনেক মামলাও করা হয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশনে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’
বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলকে ঘিরে স্বপ্নের কথা জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। সেটার আওতায় আমরা কাজ আরম্ভ করেছি। এ ছাড়া এরই মাঝে আমরা পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছি এবং নতুন করে প্রকল্প প্রাক্কলনের কাজ চলমান রয়েছে।
‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো পূর্ণভাবেই নদীটাকে পুনরুদ্ধার করা। স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা, যাতে করে আর কেউ এটা দখল করতে না পারে। আর কেউ ময়লা-বর্জ্য ফেলার সুযোগ না পায়। তা ছাড়া নদীর দুই পাশ দিয়ে হাঁটার পথ, সাইকেল চালানোর পথ, গণপরিসর ব্যবস্থা করা যাতে করে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পর্যটকরা এখানে আসতে পারেন। আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।’
পরে মেয়র বাহাদুর শাহ পার্ক পরিদর্শন করেন এবং নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কিত নির্দেশনা দেন। এ ছাড়া নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১৪৭ জন নারীর প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে ব্যাবসায়িক অনুদান বিতরণ করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।