বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপির রিকনসিলিয়েশন কমিশন নিয়ে ১৪ দলের প্রশ্ন

  •    
  • ২১ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:৩৪

আমু বলেন, “১৪ দল কখনই একাত্তর ও পঁচাত্তরের খুনিদের সঙ্গে ‘রিকনসিলিয়েশন’ এর নামে ‘রেইনবো নেশন’ নামের এই সুচতুর পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। এই দুটি প্রশ্ন বহু আগেই মিটমাট হয়ে গেছে। আবার নতুন করে করার কোনো প্রয়োজন নাই।”

‘রাষ্ট্র মেরামতে’ বিএনপি যে ২৭ দফা রূপরেখার ঘোষণা দিয়েছে, তার মধ্যে ‘ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কমিশন’ গঠনের যে কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট।

ক্ষমতাসীন জোট মনে করে, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর এ দেশীয় দোসরদের দায়মুক্তি দিতেই বিএনপি এই কমিশন গঠনের কথা বলছে।

সাউথ আফ্রিকায় সাদা ও কালোদের মধ্যে শত বছরের বিরোধের মীমাংসায় এই কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এতে এক পক্ষ আরেকপক্ষকে ক্ষমা করে দেয়।

গত সোমবার বিএনপির পক্ষ থেকে যে ২৭ দফা ঘোষণা করা হয় তাতে একটি ধারায় ছিল “প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ‘রেইনবো নেশন’ (বহু বর্ণ-ধর্ম মিলিয়ে জাতি) প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ জন্য করা হবে একটি ‘জাতীয় রিকনসিলিয়েশন কমিশন’।”

এই কমিশন গঠনের বিষয়ে বিস্তারিত কোনো কিছু বিএনপি এখনও জানায়নি।

তবে ১৪ দলীয় জোট নেতারা বলেন, দালাল আইন বাতিল করে জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতি ও সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাদের রেইনবো নেশনের অর্থই হচ্ছে পরাজিত শক্তি ও খুনি অপরাধীদের আরেক দফা রাষ্ট্র ও সমাজের স্বীকৃতিদান।

বুধবার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন।

নিউ ইস্কাটনে নিজ বাসায় এই সংবাদ সম্মেলনে আমু বলেন, “১৪ দল কখনই একাত্তর ও পঁচাত্তরের খুনিদের সঙ্গে ‘রিকনসিলিয়েশন’ এর নামে ‘রেইনবো নেশন’ নামের এই সুচতুর পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।”

তিনি বলেন, ‘এই দুটি প্রশ্ন বহু আগেই মিটমাট হয়ে গেছে। আবার নতুন করে করার কোনো প্রয়োজন নাই।’

বিএনপির ২৭ দফার অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে তাদের শাসনামলেরই অভিজ্ঞতা দেশবাসীর আছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র ও জনগণের বিরুদ্ধে বিএনপির এই রাজনীতি জনগণ অতীতে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এবারও করবে।’

‘বিএনপির সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হয়েছে তারাও আমাদের অজানা নয়’ উল্লেখ করে আমু বলেন, ‘খুবই ক্ষুদ্র স্বার্থে এক হয়েছেন।’

বিএনপি বর্তমান সরকারের মৌলিক সংশোধনের কথা বলে তারা অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলকে নিষ্কণ্টক করতে চায় বলে মনে করেন আমু।

এক প্রশ্নের জবাবে ১৪ দলের সমন্বয়ক বলেন, ‘আমরা আমাদের রাজনৈতিক ধারা নিয়ে মাঠে থাকব। এই ধারার (বিএনপি) বিপরীত অবস্থানে বিরোধিতা করব। তারা এর আগে ১০ দফা, ১৪ দফাসহ বিভিন্ন ধরনের দফা দিয়েছিল, এগুলো নতুন কিছু না। তাদের এ আন্দোলন নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।’

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে কয়েকটি প্রগতিশীল দলেরও অংশগ্রহণ কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বা প্রগতিশীল হলে জামায়াতের সঙ্গে তারা যুগপৎ আন্দোলন করত না। যারা যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দেয় তারা প্রগতির ধারার মধ্যে আছে বলে মনে করি না।’

রেইনবো নেশনের নামে বিএনপির ২৭ দফাকে ‘রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের ঐক্যের কালো দলিল’ উল্লেখ করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের (একাংশ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

তিনি বলেন, ‘কালো দলিল যারা সমর্থন করছে তারা আর যাই হোক বাম বা প্রগতিশীল ঘরানার লোক হতে পারে না। তারা বিচ্যুত।’

তিনি বলেন, ‘২৭ দফা ও ১০ দফা কার্যত বাহাত্তরের সংবিধানকে বানচাল করার সুকৌশল প্রস্তাব। যারা এটা সমর্থন করে তারা গণতান্ত্রিকও না, প্রগতিশীলও না। তারা মুক্তিযোদ্ধা হোন কিংবা কোন বামপন্থি হোন।’

ইনু বলেন, ‘জামায়াত, জঙ্গি, যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে রাজনৈতিক পার্টনারশিপ থাকবে তত দিন পর্যন্ত ২৭ কেন, ২৭০ দফা দিলেও আমলযোগ্য নয়। …এখানে রাষ্ট্র মেরামতের নামে কার্যত বাংলাদেশে রাজাকারদের আমদানি করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দল ঢাকা মহানগর সমন্বয়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কামরুল ইসলাম, ক্ষমতাসীন দলের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বাশার মাইজভাণ্ডারী, জাতীয় পার্টি জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহম্মেদ মুক্তা, গণ আজাদী লীগের সভাপতি এস কে সিকদার, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর