বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘পুরো বন খুঁজলে ইঁদুরও পাওয়া যাবে না’

  •    
  • ২১ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৩:১১

বকশীগঞ্জের কামালপুর ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা দিঘলাকোনার বাসিন্দা পুদি মারাক বলেন, ‘২০ বছর আগেও এই বনে বাঘ, ভাল্লুক, হাতি, শুয়োর, বানরসহ বহু প্রাণী ছিল। এহন কিচ্ছুই নাই। পুরো বন খুঁজলে একটা ইঁদুরও পাওয়া যাবে না।’

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় গারো পাহাড়ের বনে একসময় বাঘ, ভাল্লুক, হাতির মতো প্রাণী অবাধে বিচরণ করত জানিয়ে স্থানীয়রা বলছেন, দখলের কারণে এখন সেখানে বন্যপ্রাণী নেই বললেই চলে।

তারা বলছেন, অবৈধভাবে বন দখলের কারণে আবাসের জায়গা হারিয়ে বন্যপ্রাণীরা চলে গেছে অন্যত্র।

বকশীগঞ্জের কামালপুর ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা দিঘলাকোনার বাসিন্দা পুদি মারাক বলেন, ‘২০ বছর আগেও এই বনে বাঘ, ভাল্লুক, হাতি, শুয়োর, বানরসহ বহু প্রাণী ছিল। এহন কিচ্ছুই নাই। পুরো বন খুঁজলে একটা ইঁদুরও পাওয়া যাবে না।’

পাহাড়ি এলাকা সাতানিপাড়ার বাসিন্দা নপু মারাক নপ্তরী বলেন, ‘আগে আমরা বন্যপ্রাণীর ভয়ে সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হতাম না। এখন এত বড় বনে কিছুই নেই। আগে সবকিছু ছিল। এটা প্রকৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ।’

দিঘলাকোনার আরেক বাসিন্দা জয় দাংগো বলেন, ‘মা-বাবার কাছ থেকে শুনছি এখানে সিংহও ছিল, কিন্তু বন ধ্বংসের কারণে, অবাধে বৃক্ষনিধনের কারণে বর্তমানে কোনো পশুপাখি নেই।’

আবাসস্থল ও খাদ্যের অভাবে গারো পাহাড়ের প্রাণীরা ভারত চলে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন। তাদের একজন লাওচাপড়া এলাকার ফারুক মিয়া বলেন, ‘এই বনে পশুপাখির কোনো খাবার নাই। থাকার কোনো জায়গা নাই।

‘পশুপাখি কীভাবে থাকবে? কী খাবে? এর জন্য পশুপাখি আমাদের লাওচাপড়া বন বিভাগে নাই। সব পশুপাখি ভারতে চলে গেছে।’

জামালপুরের বকশীগঞ্জের গারো পাহাড়ের বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণী না থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে প্রাণ, প্রকৃতি ও রূপবৈচিত্র্য। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি আরও বলেন, ‘বিশাল এই বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণী না থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে প্রাণ, প্রকৃতি ও রূপ বৈচিত্র্য। দ্রুত এসবের কারণ উদঘাটন করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি সকলের।’

বকশীগঞ্জ ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি পিটিশন সাংমা বলেন, ‘আমাদের এই বনকে আরও ডেভেলপ করা দরকার। প্রাণীগুলো কী কারণে বিলীন হয়ে যাচ্ছে, তা বন বিভাগের খুঁজে বের করা দরকার।’

জামালপুরের পরিবেশবিদ জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘এই পৃথিবীতে প্রতিটি সৃষ্টিরই প্রয়োজনীয়তা আছে। আমাদের বনে গাছপালার পাশাপাশি পশুপাখিরও প্রয়োজন আছে। বন বিভাগের উচিত এই বনকে পশুপাখির আবাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা।’

বন বিভাগের বালিজুড়ী রেঞ্জের কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘বনে পশুপাখির আবাসস্থল উন্নয়নের জন্য প্রায় সাড়ে চার শ একর জায়গায় বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির চারা দিয়ে বাগান করেছি। এখানে বাঁশ আছে, যেটা হাতির খাদ্যের উপযোগী। সর্বোপরি দেখা যাচ্ছে যে, এইসব বাগানে এখন অলরেডি বিভিন্ন ধরনের পশুপাখি আসছে এবং হাতি অবস্থান করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল উন্নয়নের জন্য সামনে আরও ২৫০ থেকে ৩০০ একর জায়গা বনায়ন করার উদ্যোগ রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর