বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হলুদে সজীব পরিত্যক্ত চর

  •    
  • ২০ ডিসেম্বর, ২০২২ ১১:২১

গোমতীর চরের টিক্কারচর ব্রিজের পাশে পরিত্যক্ত জমিতে হলুদ চাষ করা আবাদ হোসেন বলেন, ‘১৫ শতক জমি খালি থাকত। ৯ মাস আগে হলুদ লাগাইছি। এবারই প্রথম। মোটামুটি ভালো ফলন হইছে। এখন হলুদ সংগ্রহ করছি। ঘরের খোরাকি রেখে বাকিগুলো বিক্রি করব।’

দিনের পর দিন ফাঁকা পড়ে ছিল গোমতীর দিগন্ত বিস্তৃত চর। চাষযোগ্য হলেও এগুলোতে আবাদ হতো না ফসল।

উদ্যোগী কৃষকের হাত ধরে সে খরা কাটে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। তাদের বোনা হলুদে চরগুলো যেমন হয়েছে সজীব, তেমনি ঘরের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সুযোগ তৈরি হয়েছে বাড়তি আয়ের।

নদীর তীরে হলুদ চাষ করা কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা, যাদের একজন কুমিল্লার আদর্শ সদরের ইউনুস মিয়া।

কটকবাজার সীমান্তে গোমতীর চরে এ বছর ৩৬ শতক জমিতে হলুদের চাষ করেছেন এ কৃষক, যে জমিন ছিল পরিত্যক্ত।

সম্প্রতি কথা হয় ইউনুসের প্রবাসী ছেলে ওয়াসিম উদ্দিনের সঙ্গে, যিনি বিদেশ থেকে এলে সহায়তা করেন বাবার কাজে।

রোদে শুকাতে দেয়া হলুদের দেখভাল করা ওয়াসিম জানান, তাদের জমিটিতে বড় বড় ঘাস জন্মেছিল; ছিল ঝোপঝাড়ও। সেখানে হলুদের ফলন হয়েছে ভালো।

হলুদ চাষের আগ্রহ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ইউনুস মিয়া বলেন, ‘কাঁচা হলুদ স্বাস্থ্যর জন্য উপকারী। খুচরা প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করি। শুকানোর পর মেশিনে ভাঙিয়ে আড়াই শ টাকা বিক্রি করি। এ বছর ৩৬ শতক জমিতে হলুদ চাষে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছি সব ব্যয় বাদে অন্তত ৪৫ হাজার টাকা লাভ হবে।

‘যে জমিটাতে কিছুই হতো না, সেখান থেকে বছরে ৪০-৪৫ হাজার টাকা আসছে পরিবারে। বাজার থেকে হলুদ কিনতে হয় না এখন।’

গোমতীর চরের টিক্কারচর ব্রিজের পাশে পরিত্যক্ত জমিতে হলুদ চাষ করা আবাদ হোসেন বলেন, ‘১৫ শতক জমি খালি থাকত। ৯ মাস আগে হলুদ লাগাইছি। এবারই প্রথম। মোটামুটি ভালো ফলন হইছে।

‘এখন হলুদ সংগ্রহ করছি। ঘরের খোরাকি রেখে বাকিগুলো বিক্রি করব। আমার আশা আছে আগামী বছর আরও বেশি জায়গায় হলুদ চাষ করার।’

পরিত্যক্ত ১০ শতক জমিতে হলুদের চাষ করা বুড়িচং উপজেলার হোসেন মিয়া বলেন, ‘৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শুকানোর পরে অন্তত ২৫ কেজি গুড়া হলুদ পাবেন। আড়াই শ টাকা করে কেজি বিক্রি করব।

‘খরচ উঠে যাবে। আর যা থাকবে, তা দিয়ে সারা বছরের ঘরের চাহিদা মিটবে।’

গোমতীর চর ছাড়াও কুমিল্লা জেলা সদর, সদর দক্ষিণের লালমাই পাহাড়, সীমান্তবর্তী বুড়িচংয়ের টিলাগুলোতে হলুদ চাষ বেড়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর কুমিল্লায় ১৪০ হেক্টর জমিতে হলুদ চাষ হয়েছে।

গোমতীচরের ইউনুস, আবাদ, হোসেনের মতো অনেকেরই আগ্রহ বেড়েছে হলুদ চাষে, তবে কীভাবে হলুদ চাষ করতে হয়, কোন মাটিতে আবাদে ফলন ভালো হয়, তা নিয়ে দ্বিধান্বিত কৃষকরা।

কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘যেকোনো পরিত্যক্ত জমিতে আদা ও হলুদ চাষ করা যায়। দুইটা ফসল খুব মূল্যবান। যেকোনো মাটিতেই হলুদ চাষ করা যায়, তবে যেসব জমি পরিত্যক্ত থাকে, ঘন ঝোপজঙ্গল আছে, সেসব জমিতে হলুদ চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

‘জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পারিবারিক পুষ্টি বাগানের মতো হলুদ চাষে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে। আগ্রহী কৃষকদের জন্য হলুদ চাষে সব ধরনের সহযোগিতা করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

এ বিভাগের আরো খবর