বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কারখানার বর্জ্য ঠেকাতে ৩ ইউনিয়নের জোট

  •    
  • ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৮:০৬

মিলের বর্জ্য ও বিষাক্ত কালো পানি প্রবেশ করে কৃষিজমিকে চাষের অনুপযোগী করে তুলেছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা। তারা জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

প্রায় পাঁচ বছর ধরে নরসিংদী সদর উপজেলার নুরালাপুর, মেহেরপাড়া ও নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারের সাতগ্রাম ইউনিয়নের শত শত বিঘা ফসলি জমিতে আবাদ করতে পারছেন না স্থানীয় কৃষকরা।

এই অভিযোগ এনে তিন ইউনিয়নের কৃষকরা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। মিলের বর্জ্য ও বিষাক্ত কালো পানি প্রবেশ করে কৃষিজমিকে চাষের অনুপযোগী করে তুলেছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা। তারা জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

রোববার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসংলগ্ন রাইনাদী নতুন সড়কে প্রতিবাদ সভায় তিন ইউনিয়নের শত শত কৃষক জড়ো হন। এতে বক্তব্য দেন মিলের বর্জ্য ও কালো পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলি জমির মালিকরা।

এ সময় ভুক্তভোগী মাওলানা আবু তাহের, হাজি নুরুল ইসলাম, মো. শাহ জাহান মিয়া, আব্দুল আওয়ালসহ আরও অনেকে তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কৃষিজমি নষ্ট করে যেখানে-সেখানে শিল্পকারখানা করা যাবে না।

ফসলের জমিতে পড়ছে কারখানার বর্জ্য, জমি বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান তিন ইউনিয়নের কৃষক/ ছবি: নিউজবাংলা

আমাদের দেশ কৃষিপ্রধান দেশ, কৃষিজমি আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে, রক্ষা করতে হবে। কারণ আমাদের দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

বক্তারা অভিযোগ করেন, ‘আজ একশ্রেণির শিল্পপতি দালালের মাধ্যমে গ্রামের কৃষকদের জমিতে মিলের বর্জ্য ও বিষাক্ত কালো পানি এনে ফেলছেন। নরসিংদী কৃষি অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন অবগত থাকার পরও মিলের বর্জ্য ও দূষিত কালো পানির কারণে শত শত বিঘা ফসলি জমিতে আবাদ বন্ধ রয়েছে।’

দূষিত বর্জ্য কোথা থেকে ফসলি জমিতে পড়ছে নিউজবাংলার প্রশ্নের জবাবে মো. শাহ জাহান মিয়া নামে স্থানীয় কৃষক বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছর ধরে তিন ইউনিয়নের কৃষকদের প্রায় ১০টি মৌজায় এক হাজার বিঘার ওপরে ফসলি জমি বিনা আবাদে নষ্ট হচ্ছে।

'জমিগুলোতে পাকিজা গ্রুপ, জজ ভূইয়া গ্রুপ, ভাঙ্গা মিলসহ মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা মিল থেকে দূষিত বর্জ্য ও বিষাক্ত কালো পানি এসে জমাট বাধে। এতে আমরা জমিতে কোনো ফসল ফলাতে পারছি না। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে কোনো ব্যবস্থাও নিচ্ছে না কেউ। তাই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

খোলা মাঠে গবাদিপশুকে ঘাস খাওয়াতে এসেছিলেন আরজুদা বেগম নামে এক নারী কৃষক। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ফসলি জমিতে বিষাক্ত রঙের পানি ও অ্যাসিড থাকায় কোনো ফসল আবাদ করতে পারছি না।

'জমিগুলোর পানি শুকিয়ে গেলেও আবার কালো পানিতে এসে তা ডুবে যায়। এ ছাড়া কালো পানি লেগে থাকায় কচুরিপানায় জমি ঢেকে গেছে। তাই আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

কারখানার বর্জ্য কৃষি জমি নষ্ট করছে, ,হচ্ছে না কোনো ধরনের আবাদ/ ছবি: নিউজবাংলা

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী কৃষি অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ডা. মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা কৃষিজমিতে আবাদ বাড়াতে মাঠে কাজ করছি। এ ছাড়া নরসিংদী সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মিলের বর্জ্য ও কালো পানি প্রবেশ করে ফসলি জমিকে নষ্ট করে দিচ্ছে।

'বিষয়টি মাসিক সভায় আলোচনা করা হয়েছে। নুরালাপুর ও মেহেরপাড়া নয় এই জেলার প্রতিটা ইউনিয়নের কৃষিজমি রক্ষায় আমরা আইনি ব্যবস্থা নিতেও তৎপর আছি।’

নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শেখ মুহাম্মদ নাজমুল হুদা নিউজবাংলাকে বলেন, কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা মিলের বিষাক্ত বায়ু ও বর্জ্য দ্বারা পরিবেশ দূষণ হওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। আর পরিবেশ দূষণের বিষয়ে যদি সংশ্লিষ্ট কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় তা হলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’

এ বিভাগের আরো খবর