বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৬৫ ভাগ রোহিঙ্গা জন্মনিয়ন্ত্রণের আওতায়

  •    
  • ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৫:৩৭

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা অনেক আগ থেকেই তা লক্ষ করে আসছি। সেটাকে নিরুৎসাহিত করতে আমরা একটা কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তারা শিগগিরই একটা সমাধান বের করবে।’

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ৬৫ ভাগ জন্মনিয়ন্ত্রণের আওতায় এসেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সচিবালয়ে রোববার ‘বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা’-সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির ষষ্ঠ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এবং মহিলা ও শিশুবিষয়কমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরাসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভার বিস্তারিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজ কাজ করে আমরা যে রিপোর্ট দেখতে পেলাম, আমরা ৬৫ শতাংশ রোহিঙ্গাকে জন্ম নিয়ন্ত্রণের আওতায় নিয়ে আসতে পেরেছি। এটা আরও ভালো জায়গায় অর্থাৎ আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।

‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্মনিয়ন্ত্রণ, পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বিভিন্ন এনজিও, সরকার, মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সবাই কাজ করেছে।’

এ ছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে যাতে বাংলাদেশি মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয় সে বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা অনেক আগ থেকেই তা লক্ষ করে আসছি। সেটাকে নিরুৎসাহিত করতে আমরা একটা কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তারা শিগগিরই একটা সমাধান বের করবেন।

‘রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার থেকে বিরত থাকেন এবং আমাদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন, সেই ব্যবস্থা করবেন। রোহিঙ্গারা যাতে আমাদের নেটওয়ার্কে ঢুকতে পারে, তার ব্যবস্থা করা নিয়েও বিস্তারিত আলাপ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী ও টহল রাস্তা নির্মাণ প্রায় শেষ হয়েছে। আপনারা জানেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চতুর্দিকে আমরা কাঁটাতারের বেষ্টনী, টহল রাস্তা ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা এরইমধ্যে প্রকল্পের কাজ ৯৫ শতাংশ শেষ করে দিয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় ৯৯ শতাংশ কাজও শেষ হয়েছে।

‘তারা আমাদেরকে এপিবিএনের কাছে পর্যায়ক্রমে তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। শুধু নিয়ন্ত্রণ কক্ষগুলো তৈরি বাকি রয়েছে। বাকি সব কাজ শেষ হয়েছে।’

সচিবালয়ে রোববার সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি: নিউজবাংলা

মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও বিকাশ নিয়ে আমরা কাজ করছি। তাদের দক্ষতা বাড়ানো, বিশেষ করে তারা নিজ দেশে ফিরে গিয়ে কিংবা তাদের জীবিকা অর্জনে যা যা করা দরকার, তা নিয়েও বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও বাইরে মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে। সেখানে কিছু কিছু অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তা নজরদারিতে আনা হচ্ছে। আমাদের এপিবিএনও কাজ করছে।

তিনি বলেন, ‘ভাসানচরে একটা দীর্ঘ দাবি ছিল সেখানে স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে হবে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। আমাদের ভাসানচরে ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা কমিউনিটি গেছে। এনজিও, পুলিশও সেখানে গেছে। সেখানে একটি ভালো হাসপাতাল হওয়া দরকার। আজ বৈঠক তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

‘হাসপাতালটি যাতে আরও সমৃদ্ধ করা হয় ও শিগগিরই তা কার্যকারিতায় নিয়ে আসতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যারা কাজ করে খেতে পারে, সেজন্য সেখানে বিভিন্ন এনজিও সক্রিয় রয়েছে। তাদের আমরা আরও সহযোগিতা করবো। তারা (রোহিঙ্গারা) যাতে সেখানে কৃষিপণ্য উৎপাদন করতে পারে, সে জন্য ছোটো ছোটো লেক করে দেয়া হয়েছে। সেখানে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক কাজ করছে।’

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ব্যবহারিকভাবে মৎস্য ও কৃষি উৎপাদনে দক্ষ করে তুলতে ব্র্যাক কাজ করছে বলেও জানান মন্ত্রী।

মাঝিদের (রোহিঙ্গা নেতা) কয়েকজন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সামনে যাতে আরও এ ধরনের ঘটনা না-ঘটে, সে জন্য সেনাবাহিনী থেকে প্রশাসন সবাইকে আরও বেশি সতর্ক হতে বলা হয়েছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসনে আমরা কাজ করছি।

‘ক্যাম্পের পাশে থাকা বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দাসংস্থাকে ভালোভাবে কাজ করতে নির্দেশনা দেয়া হবে। যাতে অপরাধ হ্রাসের পাশাপাশি মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।’

‘নেয়ার কথা বলে সবার মনোযোগ টানতে চাই না’

রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দেশে পাঠানোর কথা বলে সবার মনোযোগ টানতে চান না বলেও মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। আমরা দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক আলোচনা করেছি। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বন্ধু দেশগুলোও কাজ করছে। আমাদের আশা, শিগগিরই এর সমাধান হবে।

যুক্তরাষ্ট্র কী পরিমাণ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে নিতে চায় জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেদের ভিসা দিয়েই বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গাদের নিচ্ছে। বছর তিনকে আগে আমার সঙ্গে জাতিসংঘে নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়েছিল। তিনি তখন রোহিঙ্গা নেয়ার জন্য উৎসাহ প্রকাশ করেছিলেন।

‘আজ জানতে পারলাম তিনি মাত্র সাতজন নিয়েছেন। আর অস্ট্রেলিয়া নিয়েছে ২৪। এটা সংখ্যায় খুবই কম। নিয়ে কথা বলে সবার মনোযোগ টানতে চাই না।’

এ বিভাগের আরো খবর