‘তেল বরাদ্দ না থাকায়’ ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্স দেড় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। হাসপাতালের সেবাপ্রার্থীদের বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হচ্ছে দ্বিগুণ টাকায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তেল বরাদ্দ না থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে আবার এই সেবা চালু করা সম্ভব হবে।
ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র নিলটুলী মুজিব সড়কের পাশে ১৯১৭ সালে স্থাপন হয় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল। বর্তমানে এই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১২৫।
ফরিদপুর শহরের বাসিন্দা আরিফুর রহমান জানান, তিনি তার অসুস্থ চাচাকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
তার অভিযোগ, জেনারেল হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স নিতে চাইলে তাকে জানানো হয় তেলসংকটের কারণে হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্স চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরে তাকে দ্বিগুণ টাকা দিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতাল প্রাঙ্গণের পশ্চিম পাশে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের কাছে চারটি গাড়ি রাখার গ্যারেজ রয়েছে। এর মধ্যে দুটি গ্যারেজে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স দুটি কলাপসিবল গেট টেনে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্স দুটির চালক মোতাহার হোসেন ও ইমরান হোসেন জানান, অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় তাদের কোনো কাজ নেই। তবে তারা প্রতিদিনই হাজিরা দেন হাসপাতালে।
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার গণেশ কুমার আগারওয়ালা বলেন, তেল বরাদ্দ না পাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যে পেট্রল পাম্প থেকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের তেল নেয়া হতো, সেই পেট্রল পাম্পে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে। ফলে গত ১ নভেম্বর থেকে রোগীদের সেবায় তারা অ্যাম্বুলেন্স দিতে পারছেন না।
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘তেল কম বরাদ্দ পাওয়ায় আমাদের অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রাখতে হয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে তেল বাবদ আমাদের বরাদ্দ দেয়া হয় ৩০ লাখ টাকা। অথচ বর্তমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ৭২ হাজার টাকা।
‘বরাদ্দের টাকা বাড়বে ভেবে আমরা নির্ধারিত পেট্রল পাম্পে এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন লাখ টাকার তেল বাকিতে ব্যবহার করেছি। কিন্তু এখনও বরাদ্দ না বাড়ায় বাধ্য হয়ে অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ রাখতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সংকট সমাধানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালককে (অর্থ) দুই দফা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একবারসহ মোট তিনবার চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা কোনো সদুত্তর পাইনি। বরাদ্দ পাওয়া গেলে আবার এই সেবা চালু করা সম্ভব হবে।’