বগুড়ায় বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি ও ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়ার আগে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের বিরাজমান বিরোধকে কেন্দ্র করে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা যায়, মহান বিজয় দিবসের সকালে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংগঠনটির পতাকা উত্তোলনসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন ছিল। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের দায়িত্বশীল নেতারা জাতীয় পতাকাসহ নিজ নিজ পতাকা উত্তোলন করেন।
এ সময় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ মুখোমুখি থাকায় তাদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। সেখানে ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীরা স্লোগান দেয়া শুরু করে। একই সময়ে ছাত্রলীগের মূল কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক গ্রুপের নেতা-কর্মীরা পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে পদ না পাওয়া ছাত্রলীগের কর্মীরা অন্যদের ধাওয়া দেন।
এ সময় দলীয় কার্যালয় ও সাতমাথা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পরই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পরে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলো র্যালি করে বগুড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানায়। এরপর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের দলীয় কার্যালয়ের তালা ভেঙ্গে ভিতরে ঢোকে। এর আগে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের একাংশ বিদ্রোহীরা কার্যালয়টি তালা দিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন।
বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহার অভিযোগ, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র এক নেতার অনুসারীরা ছাত্রলীগের রাজনীতি বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বিজয় দিবস উদযাপনে আমাদের বাধা দেয়।
সজীব সাহা আরও বলেন, বিদ্রোহীরা এতদিন ছাত্রলীগ অফিস তালাবদ্ধ রেখেছিল। ছাত্রলীগের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্যই আজ আমি ও সাধারণ সম্পাদক তালা খুলে কার্যালয়ে ঢুকেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনকারী একাংশের নেতা ও বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান তৌহিদ মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলা নিষেধ আছে। আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’
গত ৭ নভেম্বর রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ৩০ সদস্যের বগুড়া জেলা শাখার আংশিক কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়। এ ঘোষণার ঘণ্টাখানেক পরই কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিক্ষোভ শুরু করেন সংগঠনটির একাংশের নেতা-কর্মীরা। তারা জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় একাংশ। ওই সময় থেকে জেলা ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপের বিরোধ চলে আসছে।