বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র্যাবের উপস্থাপন করা তথ্য মানতে রাজি নন তার বাবা নুরউদ্দিন রানা। তার অভিযোগ, ডিবি ও র্যাব পরিকল্পিত হত্যাকে অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে।
নিজ সন্তান ফারদিনকে ‘সুস্থ, সবল ও প্রাণবন্ত’ দাবি করে নুর উদ্দিন দাবি করছেন, ‘ফারদিন রাজনৈতিক কারণে হত্যার শিকার।’
বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ আত্মহত্যা করেছেন বলে বুধবার সাংবাদিকদের জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশপ্রধান হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ঢাকার ডেমরার সুলতানা কামাল সেতু থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফারদিন লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। একই দিন র্যাবের পক্ষ থেকেও একই তথ্য জানানো হয়।
তবে ফারদিনের বাবার দাবি, তদন্তকারীরা ঘটনার মোড় ঘোরাতে চাইছেন।
নুরউদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, সেটাকে অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে। তারা কাকে বাঁচাতে চাইছে? আমি এটাও বলেছি, বুয়েট ক্যাম্পাস থেকে, ওই দিকে কোনোরকম (ফারদিন) যায়নি।’
ফারদিনকে রাজনৈতিক কারণে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করেন তারা বাবা। তিনি বলেন, ‘পলিটিক্যাল না হলে কেন হবে? আমার তো কোনো শত্রু নেই রে ভাই। আমার ছেলেটারও কোনো শত্রু নেই।’
ফারদিনের মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে ব্রিফিং করার দিন র্যাব ডেকে কথা বলেছিল জানিয়ে নুরউদ্দিন বলেন, ‘আমার যা বলার বলে এসেছি। আমার ছেলে সুস্থ স্বাভাবিক ছেলে। তাকে অপহরণ করা হয়েছে। সে অপহরণ হয়েছে। মোবাইল ট্রেস করে কাউকে বোঝা যায় না যে সে এখানে এখানে ছিল, এভাবে এভাবে ছিল।’
কোথাও ফারদিনের শারীরিক উপস্থিতির কোনো প্রমাণ তদন্তকারী সংস্থাগুলো দিতে পারেনি বলেও দাবি করেন তার বাবা। তিনি বলেন, ‘রামপুরা থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ীর মাঝখানে পর্যন্ত এত এত রোমিং করল, কোথায় কোনো ফিজিক্যাল এভিডেন্স নাই!
‘কালকে (বুধবার) র্যাব ডেকে নিয়েছিল। ঘটনার পরম্পরা নিয়ে কথা বলেছে। আমিও আমার দিক থেকে বললাম। তার তো কোনো হতাশা ছিল না, স্বাভাবিক ছেলে আমাদের। সুস্থ, সবল, প্রাণবন্ত ছেলে। তার ভেতর হতাশা ছিল না।’
‘সে সাঁতার জানে না, সে হাতিরঝিল লেকে গেলেই তো টলটলা পানি ছিল, নাকি? সে কেরানীগঞ্জে গিয়েছে, সেখানে গিয়ে পানি পছন্দ হয়নি। সুইটেবল প্লেস মনে হয় নাই।’
সন্তানহারা বাবা বলেন, ‘কেউ দেখে ফেলবে, লজ্জা পাবে? মরে যাওয়ার আগে কেউ লজ্জা পায়? যে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করবে তার লজ্জা-শরমের ভয় আছে? পড়ে গেলেই পারে, সে সোজা, যেভাবে দেখছি ঝুলে নেমেছে। ঝুলে যদি কেউ নামে তার মাথা ও বুকে এত এত আঘাত কোত্থেকে এলো? সারা দেহের আর কোথাও ভাঙল না, কোথাও আর কিছু হয়নি।’