বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২১ আগস্ট মামলার আপিল শুনানি ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি

  •    
  • ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৪:০৮

গত ৫ ডিসেম্বর থেকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলায় বিচারিক আদালতের রায়, সাক্ষীদের বক্তব্য পাঠ করে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্সসহ আসামিদের করা আপিলের শুনানি আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেছে হাইকোর্ট।

গত ৫ ডিসেম্বর থেকে এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলায় বিচারিক আদালতের রায়, সাক্ষীদের বক্তব্য পাঠ করে।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৩৫ সাক্ষীর মধ্যে ৬৬ জনের জবানবন্দি পড়া শেষ হয়েছে। পরে আদালত আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলাটির শুনানি মুলতবি করে।

বিচারপতি শহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মুস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ঠিক করে দেয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহেমদ। আসামিপক্ষে ছিলেন মো. আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীসহ একাধিক আইনজীবী।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহেমদ নিউজবাংলাকে বলেন, আজ পর্যন্ত ৬৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দি পড়া শেষ হয়েছে। ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছে আদালত।

আলোচিত এ মামলাটির আপিল শুনানি আগামী বছরের প্রথম দিকেই শেষ হবে বলে প্রত্যাশা অ্যাটর্নি জেনারেলের।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, 'মামলার শুনানিতে সব আসামির ব্যাপারেই বক্তব্য থাকবে। তবে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে কোনো আপিল নেই, সুতরাং ওনার বিষয়টি আসবে না।'

২১ আগস্ট হামলার ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দেয় বিচারিক আদালত। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।

ওই বছরের ২৭ নভেম্বর দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পৃষ্ঠার নথি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়। পরে ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি মামলায় আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। সে সময়ে দ্রুত পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেয়।

পরে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলার পেপারবুক তৈরি হয়। এরপর গত ৫ ডিসেম্বর থেকে মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়।

ঘটনার বিবরণ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা।

এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী।

ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ মামলা করেন। সে সময়ের ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার প্রকৃত আসামিদের বাঁচিয়ে নির্দোষ ব্যক্তিদের ফাঁসানোর চেষ্টা করে।

২০০৭ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে পুরো দৃশ্যপট পাল্টে যায়। ২০০৮ সালের ১১ জুন দেয়া অভিযোগপত্রে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়।

তখন জানা যায়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে হামলার ছক করা হয়েছিল। পাকিস্তান থেকে এসেছিল হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। দুই বছর তদন্তের পর আরও ৩০ জনকে আসামি করে ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর ফলে এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা দাড়ায় ৫২।

মৃত্যুদণ্ড যাদেরযারা সর্বোচ্চ সাজা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে আছেন বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হরকাতুল জিহাদের সাবেক আমির শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল।

জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হানিফকেও প্রাণদণ্ড দেয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করে আদালত।

তারেক রহমান ছাড়াও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ, হরকাতুল জিহাদের সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

তাদের দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এ ছাড়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহুদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগনে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপকমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডির সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেয় আদালত।

এ মামলার আসামিদের মধ্যে ভিন্ন মামলায় মুফতি হান্নানসহ ৩ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে অন্য মামলায়। তারেক রহমানসহ পলাতক আছেন ১৬ আসামি।

এ বিভাগের আরো খবর