জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের দুই নেতাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের একজন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহিম মঙ্গলবার থেকে নিখোঁজ। আর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার তেলিগাতি ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি আতাউর রহমান নিখোঁজ রয়েছেন ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সংঘর্ষের দিন থেকে।
এদিকে নিখোঁজ থাকার পাঁচদিন পর ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান মোসাব্বিরের খোঁজ মিলেছে। পল্টন থানার এক মামলায় মঙ্গলবার আদালত তাকে রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেয়ার পর তার খোঁজ মেলে।
ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজন নিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে মামলা, গ্রেপ্তার ও নেতাকর্মী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার সঠিক পরিসংখ্যান নেই বিএনপির কাছে। তবে দ্রুতই এ সংক্রান্ত তালিকা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান মোসাব্বিরকে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে পাঁচদিন পর্যন্ত কোনো খোঁজ দেয়নি পুলিশ বা সংশ্লিষ্টরা। কাল (মঙ্গলবার) তাকে পল্টন থানার এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছে হাইকোর্ট।
‘তবে নয়াপল্টনে পুলিশি অভিযানের দিন থেকেই শ্রমিক দল নেতা আতাউর রহমানের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এরইমধ্যে মঙ্গলবার থেকে ঢাকা মহানগর ছাত্রদল নেতা আব্দুর রহিমকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
প্রিন্স বলেন, ‘গ্রেপ্তার, মামলা ও নেতাকর্মী নিখোঁজ হওয়ার সঠিক পরিসংখ্যান এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই। পুলিশের হামলায় আমাদের কার্যালয় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দাপ্তরিক এসব বিষয়ের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সেলিমকেও পুলিশ আটক করেছে। প্রয়োজনীয় তথ্যাদি যে কম্পিউটারে রয়েছে সেটিও পুলিশ জব্দ করে নিয়ে গেছে।’
ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দপ্তরের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে নিজে সব তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন জানিয়ে প্রিন্স বলেন, ‘দলের নির্বাহী সদস্য সাত্তার পাটোয়ারী সারাদেশে নেতা-কর্মীদের খোঁজ নিচ্ছেন। খুব দ্রুত তালিকা করার চেষ্টা হচ্ছে।’
আজিজুর রহমান মোসাব্বিরের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম এর আগে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘৮ ডিসেম্বর সকালে ১১টার দিকে উত্তরার একটি হাসপাতালে ৬০৩ নম্বর কেবিনে বিএনপির একজন কর্মীকে রক্ত দেয়া অবস্থায় সাদা পোশাকে কয়েকজন মোছাব্বিরকে তুলে নিয়ে যায়। সেদিন সন্ধ্যায় তাকে তেজগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়।
‘থানায় গিয়ে আমার স্বামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। তাকে খাবারও দেই। পরদিন ৯ ডিসেম্বর নাস্তা নিয়ে থানায় গেলে জানানো হয় যে তিনি থানায় নেই। তারা ডিবি অফিসে খোঁজ নিতে বলে। সেখানে গেলে জানানো হয় যে তাদের কাছেও নেই। আমার তিন বাচ্চা নিয়ে পাঁচদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করেছি। কিন্তু কেউ স্বীকার করেনি।’
মোসাব্বিরের খোঁজ জানাতে একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানায় বিএনপি।
এরপরই মঙ্গলবার পল্টন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মোসাব্বিরকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।