উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে দেশে স্থিতিশীলতার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি দুনিয়ায় যেখানেই সরকার স্থিতিশীল, যেখানে শান্তি বিরাজ করে সেখানে মানুষের মঙ্গল ও উন্নয়ন হয়।
'সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, রুয়ান্ডা, সংযুক্ত আরব আমিরাতে দীর্ঘদিন স্থিতিশীল সরকার থাকার কারণে তাদের অনেক উন্নয়ন হয়েছে।’
সবাইকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে থাকার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনি যদি আপনার পরিবারের উন্নয়ন চান, আপনারা যদি দেশের মঙ্গল চান, জনগণের কল্যাণ চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই শান্তি ও স্থিতিশীলতার দিকে নজর দিতে হবে।’
মঙ্গলবার রাতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এক অনুষ্ঠানে আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনমিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ‘যেসব অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নেই সেখানে উন্নত দেশও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’
ইরাক ও লিবিয়ার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এসব দেশের অবস্থা এক সময় অনেক ভাল থাকলেও ওই সব অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা না থাকায় তারা এখন কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন। সুতরাং যেখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নেই, সেখানে মানুষের কল্যাণ হয় না, মানুষের বড় কষ্ট হয়।’
এ সময় বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কাজ চলছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত কিছু খুনি বিভিন্ন দেশে পালিয়ে রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা একজনকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। কিন্তু এখনো পাঁচজন আত্মস্বীকৃত খুনি বিভিন্ন দেশে রয়ে গেছে।’
গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের মানুষের ত্যাগের কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে গণতন্ত্রের জন্যে, মানবাধিকারের জন্যে, ন্যায়বিচারের জন্যে, মানবিক মর্যাদার জন্যে ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। পৃথিবীর অন্য কোথাও এত মানুষ ন্যায়বিচারের জন্যে, গণতন্ত্রের জন্যে, মানবিক মর্যাদা ও মানবাধিকারের জন্যে রক্ত দেন নাই।’
ড. মোমেন ৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষে জনগণের রায়কে তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক জান্তা প্রত্যাখ্যান করে গণহত্যা শুরু করলে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সুতরাং আমরা যুদ্ধ করেছি গণতন্ত্রের জন্যে। আমরা যুদ্ধ করেছি ন্যায়বিচারের জন্যে। আমরা যুদ্ধ করেছি মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখতে। আমরা যুদ্ধ করেছি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘দরিদ্রতা একটা অভিশাপ। এই অবস্থাকে আমরা মোটামুটি অর্ধেকে নামিয়ে এনেছি।’
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের গুণাবলি বিষয়ে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেন, ‘জাতির পিতা যখন ছোট ছিলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি যখন পড়ালেখা করতেন, ওই স্কুলে রাজ-বাহাদুর বা লাট পরিদর্শনে এলে তিনি নির্ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি দাওয়া তুলে ধরতেন। নেতৃত্বের মৌলিক গুণাবলি ছোটকাল থেকেই তার মধ্যে ছিল। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার অসাম্প্রদায়িকতা ও নেতৃত্বের গুণাবলি আরও পরিণতি লাভ করেছে।’
অন্যান্যের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি ড. মশিউর মালেকসহ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।