ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নে অন্যের জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণকাজ শুরুর অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজীর বিরুদ্ধে।
জমির মালিকরা ভবন নির্মাণে বাঁধা দিলে তাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে রাতের আঁধারে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে জমির মালিক পক্ষ আদালতের শরাণাপন্ন হলে আদালত ওই জমির ওপর ১৪৪ ও ১৪৫ ধারা নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু ইব্রাহীম এসবের কিছুই মানছেন না।
জমির মালিকদের মধ্যে হাশেম জমাদারের ছেলে মো. হাসান জানান, ১৯৬১ সালে সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চর ইলিশা মৌজার এক একর ৮০ শতাংশ জমি কিনে ভোগদখল করে আসছেন তার বাবা ও চাচারা। কিন্তু ভিএস জরিপে তাদের নামে ৫৩ শতাংশ জমি রেকর্ড হয়। এর মধ্যে ৯১ দাগে ৪৩ শতাংশ ও ৯২ দাগে ১০ শতাংশ।
সম্প্রতি জমির মালিকদের মধ্যে সাহাবুদ্দিন মাস্টারের কাছ থেকে স্থানীয় নাসির আহম্মেদের ছেলে ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী ৯২ দাগের ১০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। কিন্তু তিনি ৯১ দাগের জমির মধ্যে এসে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ শুরু করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কোনো সমাধান দিতে পারেননি। পরে এ নিয়ে আদালতে গেলে আদালত জমির ওপর ১৪৪ ও ১৪৫ ধারায় নিষেধাজ্ঞা দেয়। তবে ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞাও মানছেন না ইব্রাহীম।
হাসান আরও অভিযোগ করেন, ইব্রাহীম সরকার দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় তার বিষয়ে কেউ হস্তেক্ষেপ করতে চায় না। তাই তিনি জোর করে তাদের জমি ও বাড়ির রাস্তা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে ইব্রাহীম ফরাজীর চাচাত ভাই সাদ্দাম দাবি করেছেন, ইব্রাহীম চার বছর আগে সাহাবুদ্দিন মাস্টারের কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেন এবং সেই জমিতেই ভবন নির্মাণ করছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ মিথ্যা অভিযোগ এনে ভবন নির্মাণের শুরুতে নির্মাণসামগ্রী ভাংচুর করায় ইব্রাহীম থানায় অভিযোগ দেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কয়েকজনকে আটকও করে।
অভিযুক্ত ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, ‘লিগ্যাল টাকা দিয়ে জমি কিনে আমার জমিতে আমি থাকতেছি। এই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়ভাবে অনেক সালিশ বিচার হয়েছে। কিন্তু আমার প্রতিপক্ষ কোনোকিছু মানতে নারাজ। থানায় অভিযোগের পর থানা থেকে স্থানীয় চেয়ারম্যান মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের কথা বলে। চেয়ারম্যান অনেক চেষ্টা করলেও তারা সালিশে বসেনি। তাই চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমি আমার জমিতে কাজ শুরু করেছি।’