ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের (এনবিএল) পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে ৩০ লাখ ডলার অবৈধভাবে খরচ করা, নামে-বেনামে অর্থ লুটপাট ও পাচারের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এ নির্দেশ প্রতিপালন করতে বলা হয়েছে।
আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে আদালত।
নিউজবাংলার প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
একইসঙ্গে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অর্থপাচার, দুর্নীতির তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে ৮ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের দপ্তরে করা আবেদনটি নিষ্পত্তি করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পাশাপাশি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের অর্থপাচার, দুর্নীতি তদন্তের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদকের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস বিভাগের ডেপুটি গভর্নর, ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি বিভাগের ডেপুটি গভর্নর, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), বিএফআইইউ ও সিআইডিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
‘ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩০ লাখ ডলার অবৈধ ব্যয় তদন্তে দুদক’ শিরোনামে নিউজবাংলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী চৌধুরী হাসান মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীব মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
আদেশের বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী চৌধুরী হাসান মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা পাচারের অভিযোগ উঠছে। এ নিয়ে নিউজবাংলাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাছাড়া এরকম একটি অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাৎ বা পাচার ঠেকানো না গেলে গ্রাহক, অংশীদাররা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ কারণে প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট দায়ের করেছি। আদালত শুনানি নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) আদেশ দিয়েছেন।’
এর আগে ৮ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দপ্তরে একটি আবেদন করা হয়েছিল জানিয়ে রিটকারী আইনজীবী বলেন, ‘আবেদনে তাদের অর্থপাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু সেই আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংক নিষ্পত্তি করেনি। এরপর ১ ডিসেম্বর বিবাদীদের আইনি নোটিশ পাঠাই। তাতেও তাদের কোনো জবাব পাইনি। পরে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করি।’