বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১৬ বছর পর বিএনপি কার্যালয়ে অলি, চাইলেন ‘শক্ত কর্মসূচি’

  •    
  • ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৩:৫৩

অলির রাজনৈতিক জীবন শুরু বিএনপি দিয়েই। ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯১ সালে দল ক্ষমতায় এলে পান মন্ত্রিত্ব। তবে অষ্টম সংসদ নির্বাচন শেষে মন্ত্রিত্ব না পাওয়ার পর মনোমালিন্য শুরু। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জামায়াত তোষণ, জঙ্গিবাদে মদত ইত্যাদি অভিযোগ এনে ২০০৬ সালে পদত্যাগ। গড়ে তোলেন নিজের দল এলডিপি। ২০০৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারির বাতিল হওয়া নির্বাচনে ভেড়েন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে।

বিএনপি থেকে বের হয়ে আলাদা দল গঠনের ১৬ বছর পর অলি আহমেদ গেলেন নয়াপল্টনে দলটির কার্যালয়ে। পুলিশি অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত কার্যালয়টি দেখে করলেন ক্ষোভ প্রকাশ। সেই সঙ্গে বিএনপির কাছে চাইলেন সরকারবিরোধী ‘শক্ত কর্মসূচি।’

অলি অবশ্য বিএনপিতে না থেকেও আছেন তাদের সঙ্গেই। ঘোষণা না দিয়ে অকার্যকর করে দেয়া জোট ২০ দলের শরিক, পাশাপাশি বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনেও একমত।

মঙ্গলবার দুপুরে এলডিপি নেতা বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে গেলে তাকে প্রায় এক সপ্তাহ আগে পুলিশি অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত চিত্র দেখানো হয়।

১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশটি অনুমতি ছাড়াই নয়াপল্টনে করার ঘোষণা দিয়ে জড়ো হওয়ার চেষ্টার পর গত বুধবার পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এরপর পুলিশ অভিযান তালা ভেঙে কার্যালয়ে ঢুকে গ্রেপ্তার করে কয়েক শ নেতা-কর্মীকে। জব্দ করা হয় কম্পিউটারসহ ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম। বিএনপি অভিযোগ আনে ভাঙচুরেরও।

সংঘর্ষ ও অভিযানের পর বুধবার রাতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে ছিল লণ্ডভণ্ড অবস্থা। ছবি: নিউজবাংলা

অলি ক্ষতিগ্রস্ত কার্যালয় দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি নেতাদের সহমর্মিতা জানান। তিনি বলেন, ‘সরকার যে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, অন্য রাজনৈতিক দলের সহাবস্থান মানে না, তা নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালানোর মধ্যে প্রমাণ হয়েছে।

‘বিশ্বের কাছে সরকারের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। দলীয় কার্যালয়ে হামলা, লুটপাটের বর্বরতা সবাই প্রত্যক্ষ করেছে।’

বিএনপিকে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার পরামর্শ দিয়ে এলডিপি নেতা বলেন, ‘বিএনপিকে আরও শক্তিশালী হয়ে কর্মসূচি দিতে হবে। সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার। সরকারের সেফ এক্সিটের সময় শেষ, জনগণ বিচার করবে।‘

তবে সরকার ষড়যন্ত্র করছে বলেও সতর্ক করেন তিনি। বলেন, ‘তাদের পাতানো ফাঁদে পা দেয়া হবে না।… আমাদের কাজ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে বিদায় করা। তাই করা হবে।’

অলির রাজনৈতিক জীবন শুরু বিএনপি দিয়েই। ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯১ সালে দল ক্ষমতায় এলে পান মন্ত্রিত্ব।

তবে অষ্টম সংসদ নির্বাচন শেষে মন্ত্রিত্ব না পাওয়ার পর মনোমালিন্য শুরু। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‍দুর্নীতি, জামায়াত তোষণ, জঙ্গিবাদে মদত ইত্যাদি অভিযোগ এনে ২০০৬ সালে পদত্যাগ। গড়ে তোলেন নিজের দল এলডিপি।

২০০৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারির বাতিল হওয়া নির্বাচনে ভেড়েন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে। তবে প্রায় দুই বছরের জরুরি অবস্থা শেষে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আর জোটের সঙ্গে হয়নি বনিবনা।

দশম সংসদ নির্বাচনের আগে আবার বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে মেলামেলা। পরে জোটের অংশ হয়ে যান অলি। গত কয়েক মাস আগে আবার মনোমালিন্যের কথা আসে গণমাধ্যমে। তবে বিরোধ মিটিয়ে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে নামতে একমত হন তিনি।

বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ২০ দলে যোগ দেয়ার পর অলি বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গেছেন অনেকবার। এমনকি নয়াপল্টনে বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে জোটের সমাবেশে অংশও নিয়েছেন। কিন্তু কার্যালয়ে ঢোকেননি।

সেখানে যাওয়ার পর অলিকে চা দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

এ সময় সেখানে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ।

এলডিপি নেতাদের মধ্যে অলির সঙ্গে ছিলেন নেয়ামুল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, সাকলায়েন, কফিল উদ্দিন, আবুল হোসেন ভুঁইয়া, হাফিজুর রহমান।

বিএনপি গত শনিবার ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ থেকে যে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেছে, তা সমঝোতার ভিত্তিতেই নেয়া হয়েছে বলেও জানান অলি। বলেন, ‘আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ১০দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।’

বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকারের আচরণে আশঙ্কা তৈরি হবার কারণে ১০ ডিসেম্বরের আগে নয়াপল্টনে দলীয় নেতাকর্মীরা জড়ো হলে ৭ ডিসেম্বর পুলিশ আক্রমণ চালায়, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে, অনেককে আহত করে, গ্রেপ্তার করা হয়, অফিসে লুটপাট চালায়, মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালানো হয়।’

পুলিশই কার্যালয়টিতে বোমা রেখে বিএনপির ওপর দায় চাপিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিনে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সভা সমাবেশের সুযোগ রাখছে না সরকার। …বিএনপির ওপর সরকারের আক্রমণের মাত্রা বেড়ে গেছে। সরকারের ভেতরে অস্থিরতা, দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর