ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত মকবুল আহমেদের পরিবারকে দিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে সরকার মামলার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
গত ৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির ধারাবাহিক বিভাগীয় সমাবেশের শেষ কর্মসূচি হিসেবে বিএনপি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় যে সমাবেশের ডাক দেয়, তার সভাস্থল নিয়ে বিরোধের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারান মকবুল।
মকবুল মিরপুরের পল্লবী থানার ৫ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন, যিনি জুতায় কারচুপির ব্যবসা করে সংসার চালাতেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মকবুল ছিলেন খেটে খাওয়া মানুষ। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন ওদের (মকবুলের পরিবার) বাড়িতে থাকাও নিরাপদ না। ওদের দিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে একটা হত্যা মামলা করার চেষ্টা চলছে।
‘আমরা তাদের (মকবুলের পরিবার) প্রতি সহানুভূতিশীল এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মকবুলের জীবন দান আমাদের চলার পথে অনুপ্রেরণা এবং শক্তি জোগাবে। আজ আমরা তার পরিবারকে অনুদান দিয়েছি, তবে এটা এনাফ না। বরং যে গণতন্ত্রের জন্য মকবুল জীবন দিল, সেই গণতন্ত্র যদি আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে বুঝব আমরা শহীদের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করতে পেরেছি।’
বিএনপির গণসমাবেশের দিন তল্লাশি করে সাধারণ জনগণকে হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘১০ তারিখে সবার ক্যামেরা মাঠে ছিল। শুধু মাঠে থাকেনি, ঢাকা শহরের আনাচকানাচে ঘুরে বেড়িয়েছে। সেদিন ছিল ত্রাসের নগরী। সাধারণ মানুষকে রিকশা থেকে নামানো, মোবাইল চেক করাসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই, যা তারা (পুলিশ-আওয়ামী লীগ) সরকারপ্রধানের নির্দেশে এবং দলীয়প্রধানের নির্দেশে করেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় বলেছি যে সমাবেশ পিচফুল হবে। আমাদের পার্টি অফিসের সামনে পিচফুলি অর্গানাইজড করার চেষ্টা করেছি। আতঙ্ক ছড়িয়েছে কারা, সরকার। তারা নানাভাবে চেষ্টা করেছে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে।’
গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হবে সরকারের বিদায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সে কারণেই আজকে বিজয়ের মাসে আমরা আনন্দ করতে পারছি না। আমরা দেখছি সেই ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইট। তারপর পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতা। আজকে এই সরকার সেই বর্বরতাকে হার মানিয়ে দিয়েছে। স্বাধীনতার মূল চেতনা হলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। সুতরাং গণতান্ত্রিক আন্দোলন আমরা গণতান্ত্রিকভাবেই করব এবং অবশ্যই এই সরকারকে বিদায় করব। কোনো শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। যুগে যুগে সব ফ্যাসিবাদ পরাজিত হয়েছে শান্তিপ্রিয়, নিরস্ত্র জনগণের হাতে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, নাজিম উদ্দিন আলম, আজিজুল বারী হেলাল, আকরামুল হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক প্রমুখ।