ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের আগে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে অবরুদ্ধ রাখা হয়েছিল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। রোববার এই কার্যালয় খুলে দেয়ার পর সেখানে আসতে শুরু করেছেন নেতা-কর্মীরা।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার বেলা ১১টার দিকে দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।
কার্যালয়ে ঢুকে বিএনপির এ নেতারা ভাঙচুর হওয়া সব কক্ষ পরিদর্শন করেন। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন তারা। গ্রেপ্তার নিয়ে প্রকাশ করেন ক্ষোভ।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘পুলিশ ও আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনী নজিরবিহীন বর্বরতা চালিয়েছে বিএনপি অফিসে। ফাইলপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথি, কম্পিউটার, হার্ডডিস্ক, অর্থ লুট, সব অঙ্গসংগঠনের অফিস ভাঙচুর, জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছে।
‘যেভাবে হামলা চালিয়েছে তা বিশ্বে নজিরবিহীন। নিন্দা করার ভাষা নেই। অফিস থেকে সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে। চার শর বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্য ছিল ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ পণ্ড করা। কিন্তু মধ্যমপন্থি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি তাদের কর্মসূচি করেছে।’
আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘১০ তারিখের সমাবেশের লক্ষ্য ছিল, মানুষের সামনে বর্তমান সরকারের চরিত্র তুলে ধরা। বিরোধী দল সরকারের একটি অঙ্গ, তাদের নিশ্চিহ্ন করে দিলে রাষ্ট্রব্যবস্থা থাকতে পারে না এবং নেইও।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সরকারের নির্দেশে তাদের দলের কর্মীরা ১০ তারিখ ঘিরে এমন কোনো অপকর্ম নাই যে করেনি। আতঙ্কিত করেছে সরকার। বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে দেখিয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলন গণতান্ত্রিকভাবে করব এবং এই সরকারের বিদায় জানাব।’
নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় ঘিরে বুধবার পুলিশের অ্যাকশন। ছবি: নিউজবাংলা
এর আগের দিন রোববার দুপুর ১টার দিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ সালেহ এমরান প্রিন্সের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় তার সঙ্গে বেশ কয়েকজন আইনজীবী ও দলের নেতাও কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।
এদিনই ১১টার পর নয়াপল্টনের দুই পাশের রাস্তার ব্যারিকেড তুলে নেয় পুলিশ, যাতে শুরু হয় যান চলাচল। দলীয় কার্যালয় খুলে দেয়ার সংবাদে সকাল থেকেই নয়াপল্টনে ভিড় জমান নেতা-কর্মীরা।
১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের প্রস্তুতির মধ্যে গত ৬ ডিসেম্বর বিকেলে নয়াপল্টন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। তখন থেকেই কার্যালয় তালাবদ্ধ করে রাখে পুলিশ।
ওই দিন পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে একজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনার মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ গ্রেপ্তার করা হয় অনেক নেতাকে।
সংঘর্ষের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে দলটির অনেক নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। সেখান থেকে চাল, খিচুড়ি, ১৫টি ককটেলের পাশাপাশি বোতলজাত পানি ও টাকা উদ্ধারের কথা জানায় বাহিনীটি।