জমে উঠেছে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে গণসংযোগ। বাড়ি বাড়ি অবিরাম ছুটছেন প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা। দিচ্ছেন উন্নয়নের বিস্তর প্রতিশ্রুতি।
৯ ডিসেম্বের প্রতীক পাওয়ার পর ভোট উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে রংপুর। ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে অলি-গলি, পাড়া-মহল্লা।
রোববার বেলা ১১টার দিকে দলীয় নেতা-কর্মী নিয়ে গণসংযোগে বের হন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। নগরীর হাজিরহাট, মুচির মোড়, চেয়ারম্যানের মোড়, মনোহর বাজার, সুকানচৌকি বাজার, হাসনা বাজার ও কেল্লাবন্দ কাচারি এলাকায় লাঙ্গল প্রতীকে ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেন মোস্তফা।
এ সময় তিনি বলেন, ‘রংপুর নগরীতে গত পাঁচ বছর অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। আমার আগে সরকারদলীয় মেয়র ছিলেন সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। তার সময়ে রংপুর সিটির উন্নয়নে কাজ হয়েছিল ২৭০ কোটি টাকার। আর বিগত পাঁচ বছরে আমি সাড়ে ১২০০ কোটি টাকার কাজ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘সিটির উন্নয়নমূলক কাজ নিজে উপস্থিত থেকে তদারকি করেছি। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছুটে বেড়িয়েছি। এখন মূল্যায়ন করার দায়িত্ব জনগণের।’
নগরীর সিটি বাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা নৌকা প্রতীকের লিফলেট বিলি করে ভোট প্রার্থনা করেন।
সাবেক সংসদ সদস্য ডালিয়া বলেন, ‘সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার ১০ বছর হলেও একটি মাস্টার প্ল্যান করা সম্ভব হয়নি। আমি নির্বাচিত হলে রংপুর সিটির পরিকল্পিত উন্নয়ন করে মডেল সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করব।’
উন্নয়নের জন্য সিটি নির্বাচনে নগরবাসীর কাছে নৌকায় ভোট প্রার্থনা করেন তিনি।
ডালিয়া বলেন, ‘এই সিটি করপোরেশন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেট্রোপলিটন পুলিশ, বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন আমার নেত্রী। রংপুরের উন্নয়নে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। তাই নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’
এই দুই প্রার্থী ছাড়াও ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি ও লতিফুর রহমান মিলন।
গণসংযোগে মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি ছুটছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী কামরুল হাসান টিটু বলেন, ‘ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছি। আমি আশাবাদী, তারা আমাকে নির্বাচিত করবেন। নির্বাচিত হলে সিটির মডেল ওয়ার্ড গড়তে সব ধরনের চেষ্টা করব।’
২১, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী শারমিন আরা মিতু বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে ওয়ার্ডের অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য কাজ করব। বাল্যবিয়ে রোধের পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক কার্যক্রমে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াব।’
সিটি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, ‘অবাধ, সুস্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। এ জন্য প্রার্থী, ভোটারসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
২৭ ডিসেম্বর তৃতীয়বারের মতো রংপুর সিটির নির্বাচনে ভোট গ্রহণ। এই নির্বাচনে মোট প্রার্থী ২৫৫ জন। মেয়র পদে ৯ প্রার্থী ছাড়াও ১১টি সংরক্ষিত আসনের বিপরীতে কাউন্সিলর পদে ৬৭ জন, ৩৩ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।